স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খুঁজছে বিএনপি

0

সরকার পতনে এক দফা আন্দোলনের আগে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায় বিএনপি। বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ ও অভিমানের কারণে দূরে থাকা নেতা-কর্মী বা সমর্থকদের একই মঞ্চে আনার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। এ প্রক্রিয়ায় অতীতে বিএনপির সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এদের মধ্যে সাবেক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর রয়েছেন। আন্দোলন ও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের সক্রিয় ও দলে সম্পৃক্ত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২৯ জানুয়ারি থেকে এই তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। এ জন্য ১০টি বিভাগে সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়। সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। এই দলগুলি দেশ সফর করেছে এবং ইতিমধ্যে তালিকা প্রায় সম্পন্ন করেছে। এখন দলের কার্যালয় শাখায় তালিকা সমন্বয়ের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে দল সমর্থিত প্রায় চার হাজার জনপ্রতিনিধি পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন কারণে দলের প্রতিনিধিত্বকারী অনেকেই দূরে থেকেছেন। অনেকে খেতাব থেকে বঞ্চিত হয়ে অহংকারে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন, অনেকে মামলা-হামলার ভয়ে নীরব। আবার অনেকেই মূল্যায়নের অভাবে রাজনীতি থেকে উধাও হয়ে গেছেন। এ ছাড়া ২০০৯ সাল থেকে বিএনপির সমর্থনে অনেক নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন। তাদের অনেকেই নিষ্ক্রিয়। সবাইকে এক ছাতার নিচে আনতে কাজ করছে বিএনপি।

তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, তৃণমূল থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে এই জনপ্রতিনিধিদের অনেক অবদান রয়েছে। এখন দলগত কাজে তাদের সম্পৃক্ত করা একটি নিয়মিত সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তারা এসব সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

ময়মনসিংহের টিম লিডার শামসুজ্জামান সুরুজ জানান, ইতোমধ্যে তার বিভাগের কাজ শেষ হয়েছে। অন্যান্য বিভাগেও কাজ শেষ হয়েছে। এখন দলীয় হাইকমান্ড তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই জনপ্রতিনিধিদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত দিনে এসব জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাদের অনেকেই দল থেকে দূরে সরে গেছেন। অনেককে র‍্যাঙ্ক ও ফাইলে সক্রিয় করা যায়নি। অনেকে পদে অধিষ্ঠিত হলেও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এক জনকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে অন্য জনকে বাদ দেওয়া হয়। এখন দেশের প্রয়োজনে, দলের প্রয়োজনে সবাইকে সক্রিয় ও সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সব কাজ শেষ করে দলের হাইকমান্ড এসব সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের চাওয়া-পাওয়া, সুবিধা-অসুবিধা জানার চেষ্টা করবেন। বিভাগ বা জেলা অনুযায়ী স্কাইপে তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলবেন তারেক রহমান।

তবে দীর্ঘ বিরতির পর কাজ শুরু করায় মাঠ পর্যায়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে।অনেক জনপ্রতিনিধিদের খোঁজ করেও তাদের বিস্তারিত তথ্য পাইনি। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনেক এলাকায় এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। স্থানীয় নেতাদেরও একই অবস্থা। অনেক জনপ্রতিনিধি এলাকা ছেড়ে ঢাকা বা অন্যত্র বসতি স্থাপন করায় তাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

বরিশাল বিভাগীয় দলের এক নেতা জানান, অনেক দেরিতে হলেও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের খুঁজছেন বলে তারাও খুশি। কিন্তু এরই মধ্যে তারা অনেক ভালো নেতাকে হারিয়েছে।

যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের সাবেক ছাত্রনেতা ওমর ফারুক শাফিন, আকরামুল হাসান মিন্টু ও ওবায়দুল হক নাসির। চট্টগ্রামে বেলাল আহমেদ, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, মামুন অর রশিদ ও মশিউর রহমান বিপ্লব। কুমিল্লায় শেখ শামীম ও আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী। সিলেটে কাজী রফিক ও ইকবাল হোসেন শ্যামল।

ময়মনসিংহে শামসুজ্জামান সুরুজ ও আব্দুল বারী দানি। রাজশাহীতে আবদুল মতিন, ফজলুর রহমান খোকন ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। আমিরুজ্জামান খান শিমুল, খান রবিউল ইসলাম রবি, মীর রবিউল আলম লাভলু ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *