তুমি কত বড় হবে সেটা নির্ভর করবে তুমি কত মানুষকে উপকার করলে: সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

0

মানুষ কতটা বড় হবে তা নির্ভর করে সে মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারল। জীবনে বড় হতে হলে আমিত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজ সংস্কারক শিক্ষানুরাগী ইউআইটিএস ও পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, তোমরা সময়কে নষ্ট করবে না। প্রতিটা মূহূর্ত কাজে লাগাও। আমরা তোমাদের সাথে আছি। তোমরা সামনে চল। যতদিন বিজয় না আসে। আমরা তোমাদের সাথে থাকব।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বারিধারার মধ্য নয়ানগর ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলোজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস) ক্যাম্পাসে জিরো ওয়ান ফেস্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আলোচনা শেষে সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন  কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সুফি মিজানুর রহমান বলেন, তোমরা লেখাপড়া ,জ্ঞান অর্জন, সবকিছু করবে। কিন্তু জীবনে শুধু লেখাপড়া করে মানুষ জীবনে বড় হতে পারে না। একজন মানুষ জীবনে কত বড় হবে; সেটা নির্ভর করবে তিনি অন্য মানুষের জন্য কতটুকু কাজ করলেন। অন্য মানুষকে কতটুকু সাহায্য করলেন। অন্য মানুষকে কত বেশি উপকার করলেন। সেইটার উপর নির্ভর করবে তুমি জীবনে কত বড় হবে। তুমি যদি মনে কর মানুষের উপকার করব। তুমি যদি মনে কর মানুষকে সাহায্য করব। মনে রাখবে বিধাতা তোমাকে সাহায্য করবে। আর তুমি যদি শুধুমাত্র তোমার কথা চিন্তা কর। মানুষের কথা চিন্তা না কর। তাহলে যত পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন কর। যত বড় বিদ্যান হও তোমার জীবনে পরিপূর্ণ কামিয়াব হবে না। জীবনে বড় হওয়ার একমাত্র মত্ত হলো তুমি অপরের জন্য কি করছো। অপরের জন্য কি ভাবছো।

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম ১০০ টাকা বেতন দিয়ে। ১৯৬৪ সালে নারায়নগঞ্জে মাসে ১০০ টাকা বেতনে কর্মজীবন শুরু করেছি। আজকে এতো বড় সুন্দর প্রতিষ্ঠান করতে পেরেছি। তোমরা জীবনে যদি বড় হতে চাও, কামিয়াব অর্জন করতে চাও। অসহায় মানুষের সাহায্য কর। তাদের জন্য চিন্তা কর। ওদেরকে ভালোবাস। তাহলে তোমাকে আল্লাহ অনেক বড় করবেন। আমরা লেখাপড়া শিখছি। জ্ঞান অর্জন করছি। আমাদেরকে অহংকার দূর করতে হবে। আমাদেরকে আমিত্ব ত্যাগ করতে হবে। জীবনে যদি বড় হতে চাও বিনয়ী মানুষ হতে হবে। অহংকর, ঔদ্ধত্য, দুর্বিনিতিকর মানুষ হলে জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারবে না। আমি তোমাদের জন্য এই বিদ্যাপিঠ তৈরি করেছি শুধু আক্ষরিক জ্ঞান নয়। সর্বপ্রথম তোমাদের ভালো মানুষ হতে হবে।

তিনি বলেন, তোমরা সময়কে নষ্ট করবে না। প্রতিটা মূহূর্ত কাজে লাগাও। কারণ তোমার হাতে কত সময়। তুমি জানো না। যেটুকু সময় বিধাতা তোমাকে দিয়েছে এক সেকেন্ড সময়কে বাড়াতে পারবে না। এই পৃথিবীতে মানুষ কত বড় হয়েছে সেটা নির্ভর করবে সময়কে কিভাবে কাজে লাগিয়েছেন। তোমরা সময়কে কাজে লাগাও। এই পরিবেশকে ব্যবহার কর। শিক্ষকদের কথা শোন। কোন অভাবে থাকবে না। আমরা তোমাদের সাথে আছি। তোমরা নিজের প্রাণের আনন্দে বড় হও। তোমরা মানুষের কথা ভাবো। মানুষের কথা চিন্তা কর। তোমরা অন্যকে বড় করবে। যে নিচে পড়বে তাকে উপরে উঠাবে। যে অসহায় তাকে সহায় করবে। যে র্নিগুণ তাকে গুণি বানাবে। যে মূর্খ তাকে বিদ্যান করবে। যে অসহায় তাকে সহয়তা দিবে আল্লাহ তোমাদের কুদরত থেকে বড় করবে। আমি দেখতে চাই তোমরা দেশের সম্মনিত গর্বিত অ্যাম্বাসেডর হয়ে পৃথিবীর জমিনের মধ্যে সুনাম ছড়াবে। আমরা তোমাদের সাথে আছি। তোমরা সামনে চল। যতদিন বিজয় না আসে। আমরা তোমাদের সাথে থাকব।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এই ধরণেরন ক্লাব অ্যাকটিভিটিসের মাধ্যমে মেধা দক্ষতা যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে এবং পাচ্ছে। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ কিন্তু বিদেশী কম্পিউটার। বিদেশী সফটওয়্যার। বিদেশী প্রকৌশলী দিয়ে হবে না। আমাদের নিজেদের তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান দক্ষতা বাড়াতে হবে। দেশের যত রকম সফটওয়্যার ব্যবহার করব। তার অধিকাংশই যেন আমরা নিজেরা তৈরি করতে পারি। আমাদের সেই দক্ষতা হয়। তখনই কেবল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আবু হাসান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জিরো ওয়ান ফেস্টের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও স্যার এ এফ রহমান হলের সিটিং প্রভোস্ট এবং ইউআইটিএস ট্রাস্টি বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, বিশ^বিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আ ন ম শরীফ, সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মাজহারুল হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, সিএসই বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও ইউআইটিএস কম্পিউটার ক্লাবের মডারেটর আল ইমতিয়াজ প্রমুখ।

বিশ^বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে ও ইউআইটিএস কম্পিউটার ক্লাবের সহযোগিতায় দুইদিন ব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবটিতে ছিল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, ন্যাশনাল সাইবার ড্রিল, সেমিনার, কর্মশালা, পোস্টার প্রদর্শনী, হেকাথন, ফটোগ্রাফি, ইনডোর ও আউটডোর গেমসসহ নানা আয়োজন। শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *