কিভাবে বুঝবেন শিশুর শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি আছে কিনা
অনেক শিশু খাওয়ার ব্যাপারে সিরিয়াস। তারা ঠিকমতো খেতে চায় না। সঠিক খাবার না খাওয়ার কারণে শিশুদের শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি দেখা দেয়। এছাড়াও শিশুরা আজকাল বেশি চিনিযুক্ত পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করে। এ কারণে তাদের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়।
শিশুদের ভিটামিনের অভাব বিভিন্ন উপসর্গ সৃষ্টি করে। সেক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ করা জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ভারতের আহমেদাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নবজাতক বিশেষজ্ঞ। রিচা পাঞ্চাল শিশুদের ভিটামিনের অভাবের প্রধান লক্ষণ উল্লেখ করেছেন।
ভিটামিন এ: ভিটামিন এ-এর অভাবে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। এটি রাতকানা, কুঁচকানো বা চোখের সাদা অংশে বাদামী দাগ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, শিশুরা প্রায়ই পেট বা বুকে সংক্রমণ পায়।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব শিশুদের ক্ষুধা, দুর্বলতা, বিরক্তি দেখায়।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ছোট বাচ্চাদের রিকেট নামক রোগ হয়। এতে তাদের পায়ের হাড় বাঁকা হতে পারে। এছাড়াও, ভিটামিন ডি-এর অভাবে শিশুদের হাঁটা ও দাঁত উঠতে দেরি হয়।
ক্যালসিয়াম: ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সাধারণত ভিটামিন ডি-এর অভাবে হয়ে থাকে। উপরন্তু, পেশী ক্র্যাম্প দেখা দেয়।
আয়রনের ঘাটতি: শিশুদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি ক্লান্তি, একাগ্রতার অভাব, বিরক্তি, দুর্বলতা, ফ্যাকাশে চেহারার কারণ হয়।
সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ঘাটতি: শিশুর শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম থাকলে পেশিতে ক্র্যাম্প ও দুর্বলতা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ শিশুর ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি ১২, পটাসিয়াম এবং আয়রনের অভাব রয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়।
ডাঃ পাঞ্চাল বলেন, শিশুদের খাদ্যাভ্যাসের প্রতি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি পূরণে দেশি খাবারের ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, সবুজ শাক-সবজি, পালং শাক, আম, অধিকাংশ সবুজ ও হলুদ ফল, সবজি- যেমন- পেঁপে, আম, কুমড়া ও গাজর, ফোর্টিফাইড খাবার- ঘি, দুধ ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস।
ভিটামিন ডি এর জন্য, তিনি গরুর মাংসের লিভার, ডিমের কুসুম, মাখন, পনির, মাছ এবং মাছের তেল খাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করতে সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসারও পরামর্শ দেন।
ডাঃ সবুজ শাক-সবজি, দুধ, ডিম, মাংস, কলিজা এবং মাছ ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস, বলেন পাঞ্চাল। এগুলি ছাড়াও গোটা শস্য, সিরিয়াল এবং ডালেও অল্প পরিমাণে এই ভিটামিন থাকে। ডাঃ পাঞ্চাল বলেন, তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি, অঙ্কুরিত ডাল, আমলকি এবং পেয়ারা ভিটামিন সি-এর সমৃদ্ধ উৎস।