মেট্রো রেলে ১৭ মিনিট।ঘুরলো স্বপ্ন পূরণের চাকা
যানজট নিরসনে ২০০৫ সালে ঢাকায় আধুনিক মেট্রোরেল নির্মাণের স্বপ্ন বপন করা হয়েছিল। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী মেট্রোরেল ট্রেন উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) স্টেশন থেকে ১৭ মিনিটে আগারগাঁওয়ে পৌঁছে। ১৭ বছর চড়াই-উতরাইয়ের পর, নিরবচ্ছিন্ন উড়ন্ত রেলপথে মেট্রোরেল চলছে শত কিলোমিটার গতিতে।
বুধবার দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে দিয়াবাড়ির সুরম্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে মেট্রো রেলের (এমআরটি-৬) প্রথম ট্রেনের পতাকা উড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ১৪ মিনিট পর দ্বিতীয় ট্রেনের যাত্রী হলেন প্রধানমন্ত্রী। এটি মাত্র ১৭ মিনিটে ১১.৭৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের মুকুটে যোগ হলো আরেকটি পালক। গতকাল মেট্রোরেল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিন শুধু দিয়াবাড়ি নয়, আগারগাঁও- রাজধানীজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। উদ্বোধনী দিনে তারা ট্রেনে উঠতে পারবে না জেনেও দ্রুত চলমান মেট্রো রেল দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছিল। বৃহস্পতিবার তাদের অপেক্ষার অবসান হবে। আজ থেকে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দিয়াবাড়ি-আগারগাঁও সেকশনে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর ট্রেন চলবে। রুটে সাতটি স্টেশনে কোনো অস্থায়ী স্টপেজ থাকবে না।
এটি পূর্ণ সক্ষমতার সাথে ধাপে ধাপে চলবে। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতি সাড়ে তিন মিনিটে ট্রেন চলবে। যদিও এটি এখন প্রতি যাত্রায় কয়েকশত যাত্রী বহন করে, তারপর থেকে সর্বোচ্চ ২,৩০৮ জন যাত্রী একবারে চড়তে পারবে।
দিয়াবাড়িতে সুধী সমাবেশে ভাষণ শেষে আসান মেট্রোরেল স্টেশনে ছোট বোন শেখ রেহানার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তিনি মূল বোর্ড পরিদর্শন করেন এবং পাশে তেঁতুলের চারা রোপণ করেন। দুই বোন তিনতলা স্টেশনের কনকোর্স লেভেলে উঠে দুপুর ১টা ৩৪ মিনিটে এক নম্বর কাউন্টার থেকে টিকিট কিনেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরাও স্মার্ট কার্ড ও মেট্রো পাস কিনছেন ৫০০ টাকায়।
চলন্ত সিঁড়িতে তৃতীয় তলায় প্ল্যাটফর্মে আসেন সরকারপ্রধান। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু লমিতা তাকে স্বাগত জানান। আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি ১:৪৫ এ ট্রেনে উঠেন। মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি, নারী, আগুন সন্ত্রাসে আহত ও নিহতদের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ছিলেন। তারা তৃতীয় ও চতুর্থ বগিতে বসেন।
ট্রেনের দ্বিতীয় বগিতে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মাঝে বসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী। এই বগিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ নেতারা এবং মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা ছিলেন।