সুষ্ঠু ভোটের কথা বলার জন্য মুক্তিযোদ্ধা ম. ইনামুল হককে চড়

0

সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে লিফলেট বিতরণকালে পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী জনাব ইনামুল হককে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়। শনিবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এতে দেখা যায়, সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সাক্ষাৎকারের সময় ইনামুল হককে চড় মারেন এক ব্যক্তি। চড় মারার পরিচয় জানা না গেলেও প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে আসা মেহেরপুরের এক কর্মী এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে ম. ইনামুল হক বলেন, সার্বজন বিলাবলী দলের ব্যানারে ২০২১ সাল থেকে প্রতি শনিবার শাহবাগে লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন তারা। জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে ২৭ ডিসেম্বর অর্ধদিবস হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে তারা। এ কর্মসূচির সমর্থনে শনিবার বিকেলে শাহবাগ এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয়। এ সময় এক ব্যক্তি তার ওপর হামলা চালায়।

তিনি বলেন, জনগণের দাবির কথা বলায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের হামলার শিকার হন তিনি। হামলাকারী কারা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে তার সঙ্গীরা জানান, তারা মেহেরপুর থেকে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে এসেছেন।

তিনি বলেন, এভাবে হামলা করে তাদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। ওই ঘটনার পর তারা শাহবাগে আরও আধা ঘণ্টা লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করেন।

ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, অনুষ্ঠান চলাকালীন কোথাও সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ইনামুল হক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থা ভোটকেন্দ্র দখলে পরিণত হয়েছে। একজন স্বাধীনভাবে নির্বাচন করবে- এটা আইনের দ্বারা রোধ করা হচ্ছে।’

এ সময় ফিরোজা রঙের শার্ট ও ধূসর রঙের কোট পরা এক ব্যক্তি ইনামুল হকের বাম গালে চড় মেরে বলেন- ‘দেশ কী ধ্বংস হচ্ছে?…দেশ ধ্বংস হচ্ছে…’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসন সচিব (সুজন) ডা. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অসহিষ্ণু রাজনীতির চিত্র এটি। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা তাদের কথা, বক্তব্য ও কাজে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে কলুষিত করছেন। দেশের রাজনীতিতে সহনশীলতা না ফিরলে তথাকথিত উন্নয়ন কোনো কাজে আসবে না। এ জন্য সুষ্ঠু ভোট ও নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।

জানা যায়, এম. ইনামুল হক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ায় তার বাবা হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে কারাবরণ করেন। ইনামুল হক ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৫-৮৬ সালে ইংল্যান্ডের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি থেকে ওয়াটার রিসোর্সেস সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৮ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ইনামুল হক একজন লেখক, কবি, গবেষক এবং সংগঠক। বর্তমানে জলপরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ও সর্বজন বিপ্লবী দলের আহ্বায়ক হিসেবে কর্মরত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *