স্মার্ট সিটি গড়তে চান মোস্তফা, কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেন ডালিয়ার।রাসিক নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর ইশতেহার

0

রংপুর সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচনী প্রতীক পেয়ে শুক্রবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। এদিকে, আড়াইশ বছরের পুরনো শহরকে ‘স্মার্ট সিটি’তে রূপান্তরের কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন মোস্তফা। আর কর্মসংস্থান বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডালিয়া।

নগরীর কলেজ রোডে জাতীয় পার্টি রংপুর মহানগরীর অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রংপুরকে একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত সবুজ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ৩১ দফা ইশতেহার দেন লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা। এতে নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুজ্জীবিত, উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজট নিরসনসহ ইতোমধ্যে প্রণীত মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করবেন বলে তিনি দাবি করেছেন। বিদায়ী মেয়র বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে নগরীকে একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, নিরাপদ ও পরিকল্পিত মহানগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

সাবেক মেয়র বলেন, নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুজ্জীবিত করতে ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ইতোমধ্যে একজন পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। ২২০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এর মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হবে। নাগরিক সেবা প্রদানের সুবিধার্থে জমি অধিগ্রহণের পর আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ করা হবে।

তিনি বলেন, আধুনিক সিটি করপোরেশন নির্মাণের জন্য প্রস্তুত মহাপরিকল্পনার গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ৩৩টি ওয়ার্ডের নিজস্ব ওয়ার্ড কমপ্লেক্স থাকবে যাতে নাগরিক সেবা সহজতর করা যায় এবং নাগরিকদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়া যায়। নগরবাসীর সেবা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ‘রংপুর অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হবে। শহরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা একটি টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডালিয়া নির্বাচনী ইশতেহারে রংপুর মহানগরের পরিকল্পিত উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, বেকারত্ব দূরীকরণ, যানজট সমস্যা থেকে উত্তরণ ও সড়কে শৃঙ্খলাসহ নানা পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন।

রংপুর নগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ২৯ দফা ইশতেহারে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে মাটির সঙ্গে একমুখী সড়ক নির্মাণ করে রিকশা ও অটোরিকশা চলাচলের ব্যবস্থা করবেন। শ্যামাসুন্দরী খালের দুই পাশে ভরাট। স্থানীয় সরকারের অধীনে স্কুল-কলেজ উন্নয়ন, নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বেকারত্ব কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি নগরীতে ছয়টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করবেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসবেন, হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে নারীদের জন্য আলাদা উদ্যোগ নেবেন এবং দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেবেন।

ডালিয়া বলেন, সরকারি সহায়তায় তারা ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগসহ বিভাগীয় শহর এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন। মূল শহরের যানজট নিরসনে পথচারী ক্রসিং, আন্ডারপাস ও রেলগেট এলাকায় ফ্লাইওভার ও আধুনিক গাড়ি পার্কিং লট নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নগরীর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্যামাসুন্দরী খালটিকে ঢাকার হাতিরঝিলের মতো করতে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে সকালে উৎসবমুখর পরিবেশে ৯ মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২৫৫ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভোট হবে ২৭ ডিসেম্বর। এবার ভোটার ৪ লাখ ২৬ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *