‘বই নাগালের বাইরে থাকলে জাতি মানসিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাবে’।কাগজের দাম কমানোর দাবি

0

হঠাৎ করে বাজারে কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রকাশনা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। কাগজের দাম কমানোসহ বইমেলায় সরকারি নীতির অসঙ্গতি দূর করে একটি গ্রহণযোগ্য সমন্বিত নীতির দাবি জানিয়েছেন প্রকাশকরা। অন্যথায় সৃজনশীল বই ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেলে জাতি ক্রমশ মানসিকভাবে দেউলিয়া ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে। সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রকাশক সংগঠন সৃজনশীল প্রকাশক ঐক্যের ‘কাগজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। এ সময় সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন নাথ।

সংবাদ সম্মেলনে মিলন নাথ বলেন, কাগজের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের পুরো প্রকাশনা খাত বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। একই সময়ে যুক্ত হয়েছে মুদ্রণের জন্য ব্যবহৃত আমদানি নির্ভর প্লেটের অভাব। জরুরী প্রকাশনায় উচ্চ মূল্য দিয়েও এসব উপকরণ মেলে না। এই অস্বাভাবিকতা এখন চরম পর্যায়ে। বর্তমান বাজারদরে কোনো মুদ্রণমুখী কাজ করা সম্ভব নয়। গত ৮ মাসে ৮০ জিএসএম মানের কাগজের রিম ১৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫০০ টাকা হয়েছে। কাগজের এমন দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রকাশকরা। ২০ টাকার বই এখন ২০০ টাকাও রাখা যায় না। উঠতি বাজারে চড়া দামের বই  বিক্রি হচ্ছে! মূল্যস্ফীতির কারণে বই বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

মিলন নাথ বলেন, ‘সমাজে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, দেশে নতুন লেখক সৃষ্টি এবং প্রতিষ্ঠিত লেখক-চিন্তক তৈরি করে চিন্তাশীল জাতি গঠনের জন্য প্রকাশকরা সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষামূলক বই তৈরি করেন। বই ছাড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্জন সম্ভব নয়। কাগজের দামের অত্যাধিক বৃদ্ধি বইকে উচ্চ মূল্যে বিলাসবহুল বস্তুতে পরিণত করতে পারে না। সৃজনশীল বই ক্রেতার নাগালের বাইরে থাকলে জাতি ক্রমশ মানসিকভাবে দেউলিয়া ও দীন দরিদ্র হয়ে পড়বে। এক বছরে নতুন কোনো বই প্রকাশিত না হলে তার নেতিবাচক প্রভাব আগামী পাঁচ বছর পূরণ হবে না। জাতি সাহিত্য উপকরণে পিছিয়ে থাকবে। তাই যারা কৃত্রিম কাগজের সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে দেশের বই ও বইমেলার উৎপাদন ও গুণগত মান নিয়ে সরকারি নীতির অসঙ্গতি দূর করে একটি গ্রহণযোগ্য সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সময় পাবলিকেশন্সের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ, অনন্যা পাবলিকেশন্সের প্রকাশক মনিরুল হক, সমগর পাবলিকেশন্সের প্রকাশক শওকত আলী, জাতীয় সাহিত্য পাবলিকেশন্সের প্রকাশক কমল কান্তি দাস, দেলোয়ার হোসেন, আকিশ্বর পাবলিকেশন্সের প্রকাশক এ.কে. নাসির আহমেদ সেলিম, কাকলী পাবলিকেশন্সের প্রকাশক প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *