কাতার তরুণ গণিমের বিজয়গাঁথা

0

এবারের বিশ্বকাপ নানাভাবে ভিন্ন। কাতারের আল-বাইত স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দর্শকরাও পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত শুনেছিলেন। মঞ্চে হাজির হলিউড অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যান। তার সঙ্গে কথোপকথনে গণিম আল মুফতাহ। ঘানিম আল মুফতাহ বিরল ‘কাডল রিগ্রেশন সিনড্রোমে’ ভুগছেন। ৬০,০০০ শিশুর মধ্যে একজন এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেরুদণ্ডের নীচের অংশে কিছু সময় বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।

ঘানিম বর্তমানে উপসাগরীয় অঞ্চলের অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা, কাতারের তরুণ প্রজন্মের আইকন! এছাড়াও তিনি কাতারের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তা, সমাজসেবী, ইউটিউবার, টিক-টোকার, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র, প্রেরণাদায়ী বক্তা। ঘনিম এ বছর ফিফার শুভেচ্ছাদূত নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁর গল্প শুনে নিজেদের লড়াইয়ের প্রেরণা পায়।

শরীরের নিচের অংশ ছাড়াই পৃথিবীর আলো দেখে আসা ঘানিম আল মুফতাহ এবারের বিশ্বকাপের মাধ্যমে ইতিহাস গড়লেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে মরগান ফ্রিম্যানের সঙ্গে ঘানিমের কথোপকথন শুনল বিশ্ব। কিন্তু যখন এই শিশুর জন্ম হয়, ডাক্তার বলেছিলেন যে সে সর্বোচ্চ ১৫ বছর বাঁচতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার পর কেটে গেছে আরও পাঁচ পাঁচ বছর।

কোনো স্কুলই গনিমকে ভর্তি করতে চায়নি। এর জন্য গণিমের মাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে এই শরীর নিয়ে ফুটবল খেলতেন। পার্থক্য শুধু এই যে অন্যরা তাদের পায়ে বুট পরে, ঘনিম তার হাতেই পায়। ঘানিম আল মুফতাহ তার হাত ধরে হাঁটছেন। সে হাত দিয়ে অনেক কিছু করতে পারে এমনকি গাড়িও চালাতে পারে! গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জাবাল শামসেও আরোহণ করেছেন ঘানিম।

ইনস্টাগ্রামে তার ৩০ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। টিকটকেও তিনি বেশ জনপ্রিয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পর এখন ঘনিমের খ্যাতি বেড়েছে, ইতিমধ্যেই বিপুল সংখ্যক শুভানুধ্যায়ীর মন জয় করেছেন ঘনিম। আরবীতে ঘানিম শব্দের অর্থও বিজয়ী বা সফল। বিশ্বকাপের বিজয়ীর দেখা হবে ফাইনালে ১৪ ডিসেম্বর। আর মাঠের বাইরে জীবনের লড়াইয়ে কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনের দিনেই বিশ্বকে ট্রফির মতো জয় উপহার দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *