মজুদকৃত চিনি বাজারে ছাড়ার নির্দেশ  প্রধানমন্ত্রী।গ্যাস সংকট সমাধান ও শুল্ক কমানোর দাবি মিল মালিকদের

0

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও বলছে, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি আমদানি হয়েছে। ফলে মজুদের কোনো ঘাটতি থাকার কথা নয়। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, চিনিকল ও শোধনাগারগুলোতে অন্তত এক লাখ টন চিনির মজুদ রয়েছে, যা অন্তত তিন মাসের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। কিন্তু বাজারে চিনির ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থায় চিনির বাজার স্থিতিশীল করতে মিল মালিক, শোধনাগার ও পাইকারি বিক্রেতাদের মজুদকৃত চিনি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার চিনিসহ নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান , আহমদ কায়কাউস এ বার্তা দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. সেখানে জানানো হয়, বর্তমানে চিনিকল ও শোধনাগারে মজুত থাকা এক লাখ টন পরিশোধিত চিনি বাজারে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, এই সরবরাহ নিশ্চিত হলে চিনির বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আশা করছি।

এদিকে ঢাকাসহ দেশের সব বাজারে চিনির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। গত ৬ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণ করে। তবে এই দর বাস্তবে বাস্তবায়িত হয়নি; বরং সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে চিনি। এই অতিরিক্ত দামেও অনেক দোকানে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে চিনি কিনতে হওয়ায় তারা বেশি দামে চিনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান দোকানিরা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভায় চিনিকল, শোধনাগার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে চিনিকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে এখনো অন্তত তিন মাসের চিনি মজুদ রয়েছে। তবে গ্যাস সরবরাহ স্বল্পতার কারণে চিনি শোধনাগারগুলো পূর্ণ গতিতে উৎপাদন করতে পারছে না।

বৈঠকে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান বলেন, দেশে চিনি নেই তা বলা যাবে না। কারখানায় কাঁচা চিনি রয়েছে। পরিশোধনের পর প্রয়োজনীয় চিনি সরবরাহের চেষ্টা চলছে। তবে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় উৎপাদন কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।

অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, শুল্ক কমানো হলে চিনির দাম কমার আশ্বাস দিলে সরকার তা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে। তার আগে ব্যবসায়ীদের সরবরাহ বাড়াতে হবে। গ্যাস সংকটের কারণে শোধনাগারে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায় বিষয়টি অবগত রয়েছে। এ নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পেট্রোবাংলার সঙ্গেও কথা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *