মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন খার্গ?

0

দুই দশক পর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব গান্ধী-নেহরু পরিবারের বাইরে চলে যায়। কংগ্রেসের নতুন শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন মল্লিকার্জুন খড়গে। বুধবার তার প্রতিপক্ষ শশী থারুরকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে দলের ১৩৭ বছরের ইতিহাসে তিনি ষষ্ঠ সভাপতি হন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন যে তার সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে দেশের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শক্ত ঘাঁটি কাঁপানো। সেটা তিনি কতটা করতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়।

প্রায় ৯.৫০০ ভোটের মধ্যে খড়গে পেয়েছেন ৭.৮৯৭ ভোট। থারুর পেয়েছেন ১ হাজার ৭২ ভোট। বাতিল হয়েছে ৪১৬টি ভোট। থারুর বিজয়ী খার্গকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং শুরুতে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন সত্ত্বেও পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি সোনিয়া গান্ধী, তার ছেলে রাহুল গান্ধী এবং মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী খড়গেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কর্মীদের আশা নতুন নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াবে কংগ্রেস।

কংগ্রেসে খাড়গেকে গান্ধী পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ মনে করা হয়। এ কারণে গান্ধী দলের হাতুড়ি পেছন থেকে নাড়াবেন বলে মনে করছেন অনেকে। জয়ের পর খড়গে বলেন যে এই নির্বাচন দলকে শক্তিশালী করবে এবং একই সাথে ভারতের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’ প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুরকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

খড়গের বিজয়ের ৮০ বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে কংগ্রেস সমর্থকরা উদযাপন করেছে। তার নিজ রাজ্য কর্ণাটক বিশেষ করে ব্যাপক উদযাপন দেখেছে। আনন্দে আবির খেলে কর্মী-সমর্থকরা একে অপরকে লাড্ডু খাওয়ান।

তারা মনে করেন, নতুন নেতৃত্বে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াবে। ফলাফল ঘোষণার ২৪ ঘন্টা আগে মঙ্গলবার বিজেপির শাখা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত নাগপুরে পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদ নির্বাচনে কংগ্রেস বিজেপিকে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত করেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ৫২ বছর পর কংগ্রেস আবারও একজন দলিতকে সভাপতি পদে পেল।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খড়গেকে দলে সাংগঠনিক সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে সব স্তরে ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপির মোকাবিলা করতে তাকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। শুরুতেই তাকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি শুধু গান্ধী পরিবারের একজন প্রক্সি নন এবং আসলে দলের নিয়ন্ত্রণে আছেন। তিনি বলেন   প্রতিটি সিদ্ধান্তে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের সাথে পরামর্শ করবেন না, তবে তাদের নির্দেশনা নেবেন। কারণ গান্ধীদের দল পরিচালনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।

কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া একটি বড় সম্মান এবং দায়িত্ব। তার প্রত্যাশা খাড়গে এই কাজে সফল হবেন। সহস্রাধিক সহকর্মীর সমর্থন পাওয়াও তার জন্য গর্বের বিষয়। থারুর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আজ সত্যিই আমাদের দলের পুনরুজ্জীবন শুরু হয়েছে।’

খড়গে সভাপতি হবেন এমন ধারণা আগে থেকেই ছিল। তাকে গান্ধী পরিবার সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য শেষ নির্বাচন হয়েছিল নভেম্বর ২০০০ সালে। তারপর কংগ্রেস নেতা জিতেন্দ্র প্রসাদ সোনিয়াকে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু তিনি অপমানজনক পরাজয় বরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *