পাম্প চলে না।রাজধানীতে পানির সংকট চরমে

0

রাজধানীতে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সমানতালে বাড়ছে পানি সংকট। আগের বছর শরৎকালে পানির অভাব না থাকলেও এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা ঢাকা ওয়াসায় পানি না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। তারা গাড়ি-ট্রলিতে পানি সরবরাহের জন্য আবেদন করছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছে না ওয়াসা। ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শহীদ উদ্দিন  বলেন, এক ঘণ্টা লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু চার ঘণ্টার লোডশেডিং সামলাতে সময় লাগে আরও চার ঘণ্টা। এ অবস্থায় পাম্পগুলোতে জেনারেটর বা মোবাইল জেনারেটর ব্যবহার করে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক পাম্পে দুটি বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। যে কোনো একটি লাইনে বিদ্যুৎ থাকলে পাম্প চালানো সম্ভব। দুটি সংযোগেই বিদ্যুৎ না থাকলে মোবাইল জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কিছু পাম্প, এমনকি মোবাইল জেনারেটরও সরু রাস্তার কারণে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। তারপর পাম্প বন্ধ করতে হবে। এসব কারণে গাড়িতে করে পানি সরবরাহের চাহিদা বেড়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্পের সংখ্যা নয় শতাধিক। এদের মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী। বাকি পাম্পগুলো থেকে দৈনিক প্রায় ১০০ মিলিয়ন লিটার পানি পাওয়া যায়। বাকি পানি আসে চারটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম পানি পাচ্ছে পাম্পগুলো। প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে প্রায় ২০০ মিলিয়ন লিটার সরবরাহ করতে সক্ষম ওয়াসা। ফলে অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট।

গত কয়েক বছরে রাজধানীতে যানবাহনে পানি সরবরাহের জন্য ওয়াসার কাছে কোনো অনুরোধ আসেনি। প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাজধানীর বাসিন্দাদের কাছ থেকে পানির চাহিদার প্রায় তিন শতাধিক গাড়ি সংগ্রহ করা হয়। অন্যদিকে ঢাকা ওয়াসা আড়াইশ যানবাহনে পানি সরবরাহ করেছে। লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনুযায়ী কয়েকদিন ধরে এই চাহিদা বাড়ছে ।

পানির ট্রাক সরবরাহ তদারকিকারী ঢাকা ওয়াসার একজন কর্মকর্তা  বলেন, মোহাম্মদপুরের আদাবর, মনসুরাবাদ, লালমাটিয়া থেকে পানির চাহিদা সবচেয়ে বেশি আসছে। এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না। এসব এলাকা থেকেও পানির গাড়ির প্রচুর চাহিদা আসছে। তিনটি গাড়ির ডিমান্ড লেটার দিলে তাদের এক থেকে দুটি গাড়ি নিয়ে ম্যানেজ করতে হয়। প্রতিটি আঞ্চলিক অফিস থেকে গাড়িতে করেও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি পানি সংকট বাড্ডা-কালাচাঁদপুর, গুলশান, আদাবর ও উত্তরার কয়েকটি এলাকায়। গুলশান ২ নম্বর রোডের ৮৬ নম্বর বাসিন্দা বলেন, ওয়াসার কাছে তিনটি গাড়ি পানি চাইলে একটি গাড়ি দেয়। এক মাস ধরে তারা এভাবেই চলছে। তারা গোসলের সময় কম পানি ব্যবহার করছে।

একই অবস্থা উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৩৩ নম্বর রোডের বাসিন্দাদের। ওই রাস্তার এক বাসিন্দার অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই তাঁরা পানি পাচ্ছেন না। এরপর গাড়িতে করে পানি আনতে ওয়াসার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদবির করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *