আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ শতাংশের ওবেশি।বিবিএসের পরিসংখ্যান প্রকাশ

0

গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির হার বা মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আগস্টে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে তা কিছুটা কমে ৯.১ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতি হল পরের বছরের একই মাসে আগের বছরের একটি নির্দিষ্ট মাসের জন্য ভোক্তা মূল্য সূচকের শতাংশ বৃদ্ধি। বিবিএসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি রেকর্ড করা হয়েছিল ১০.২০ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। কারণ বেশি দামে আমদানি করতে হয়, বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এ ছাড়া পরিবহন খরচও বেড়েছে। এ ছাড়া কারসাজি করে কেউ দাম ​​বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শামসুল আলম বলেন, বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোতেও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ। এটি আগামী বছর ১৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি খুব একটা খারাপ নয়।

বিবিএসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি ছিল। এ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তবে সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.০৮ শতাংশে। তবে আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেশি ছিল। এ দুই মাসে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ ও ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগস্টের মূল্যস্ফীতি শহুরে মানুষের চেয়ে গ্রামীণ জনগণকে বেশি প্রভাবিত করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেম গবেষণা ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন  সরকারের হিসাবের বাইরে বিকল্প হিসাব করলে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কম হবে না বলে মনে করেন বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের জন্য মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। কারণ তাদের আয়ের একটি বড় অংশ খাদ্যপণ্যে ব্যয় হয়। এ অবস্থায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী ৯ থেকে ৯.৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। সার্বিক পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। সেলিম রায়হানের পরামর্শ, বাজারে পণ্যের সরবরাহ ঠিক করতে হবে। বিকল্প আমদানি উত্স খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন. দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়াতে হবে। কারণ তারা যথেষ্ট নয়। বিতরণে অস্বচ্ছতা রয়েছে।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্টে শহুরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। তখন গ্রামীণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির গ্রামীণ-শহরের ব্যবধান কিছুটা কমলেও তা অব্যাহত ছিল। সেপ্টেম্বরে গ্রামীণ ও শহুরে মূল্যস্ফীতি যথাক্রমে ৯.১৩ ও ৯.০৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *