ইরানের ৮০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
ইরানে পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশের ৮০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৫-এ পৌঁছেছে।
এ অবস্থায় বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।
ইরানের মাশহাদে চলমান বিক্ষোভে নিহত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে শনিবার প্রেসিডেন্ট রাইসি টেলিফোন করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, যারা দেশের শান্তি-নিরাপত্তাকে আমলে নেবে না, তাদের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে মোকাবিলা করা হবে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন গতকাল জানিয়েছে যে বিক্ষোভে ৩৫ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্য রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিক্ষোভকে দাঙ্গা বলে অভিহিত করেছে। দেশটির গুইলান প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, শুধুমাত্র এই অঞ্চলেই বিক্ষোভ থেকে ৭৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬০ জন নারী।
ইরানে জনসমক্ষে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাব সহ পর্দার কঠোর আইন রয়েছে। দেশটির ‘পলিসি পুলিশ’ এই নিয়মগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করে। এই নিয়মের অধীনে নীতি পুলিশের একটি দল ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরান থেকে মাশা আমিনি নামে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করে।
আটকের পর আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর ইরান জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার পর্যন্ত ইরানের ৮০টিরও বেশি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানে চলমান বিক্ষোভের ঘটনায় সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষাকারী বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, দেশে ১১ সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নিলুফার হামেদীও রয়েছেন। সাংবাদিক মাশা আমিনী হত্যার কথা জানিয়েছেন এই নারী।
এর আগে ২০১৯ সালে, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। এরপর থেকে দেশে এত বড় কোনো বিক্ষোভ হয়নি।