‘মিষ্টি খেতে’ লক্ষাধিক টাকা দাবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বরখাস্ত পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম
পাবনার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ দাশুরিয়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সাজ্জাদুর রহমানকে ঘুষ দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার রাতে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আকমল হোসেন জানান, ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে কোম্পানির প্রধান কার্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে ময়মনসিংহ তদারকি অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জিএম আকমল হোসেন বলেন, “ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কমিটির সদস্য কতজন এবং কত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে জানতে চাইলে তদন্তের স্বার্থে বলতে পারছেন না বলে জানান।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আমিনুল ইসলাম রানা নামে এক খেলাপি গ্রাহক নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে টাকার বান্ডিল দিচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
গ্রাহক আমিনুল ইসলাম রানা বলেন, কিছুদিন আগে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে দাশুরিয়া জোনাল অফিসে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেছিলাম। সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম যোগ করার পরও কর্তৃপক্ষ সংযোগ দিচ্ছে না। বিভিন্ন অজুহাতে ডিজিএম সাজ্জাদ মিষ্টি খাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে ডিজিএমকে দেওয়া হয়।তিনি টাকা নিয়ে ড্রয়ারে রাখলে সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি ছবি তোলেন। টাকা ছুড়ে দেন ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান।ভিডিও রেকর্ড করা ব্যক্তিকে চেনেন না বলে দাবি করেন রানা।
এদিকে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ দাশুরিয়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সাজ্জাদুর রহমান টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ভিডিও ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমিনুল ইসলাম রানার বাবার নামে বিদ্যুৎ সংযোগের বিল বকেয়া ৯ লাখ ৩ হাজার ৯৪৮ টাকা। দীর্ঘদিন বিল পরিশোধ না করায় তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
সাজ্জাদুর বলেন, “আমিনুল ইসলাম আদালতে রিট করলে আদালত তাকে ৬ মাসের মধ্যে বিল পরিশোধের নির্দেশ দেন। আমরা ৬ মাসের মাসিক কিস্তিতে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু সে বিল পরিশোধ না করে উল্টো হুমকি দেয়। আমিনুল ইসলাম টাকা না দিয়ে ভিন্ন নামে নতুন সংযোগের চেষ্টা করছিল।
ডিজিএম বলেন, “সেদিন তিনি নতুন সংযোগ নিতে এলে তাকে জানানো হয়, আগের বকেয়া বিল দিতে হবে। তখন তিনি টাকা বের করে আমাকে দেন। আমি টাকা নিয়ে তাকে বললাম- ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দেন।এ সময় কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ভিডিও করে ঘুষ হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করছেন।পরে তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
এদিকে সাময়িক বরখাস্ত ও শোক প্রকাশের বিষয়ে জানতে ডিজিএম সাজ্জাদুরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।