ইবিতে মধ্যরাতে বিস্ফোরণ, ছাত্রলীগের তোপে উপাচার্য

0

গভীর রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর শিক্ষার্থীদের দুটি আবাসিক হলের পাশে এ ঘটনা ঘটে বলে শিক্ষার্থীরা জানান। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর প্রতিবাদে আজ বৃষ্টি উপেক্ষা করে উপাচার্যের কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের তোপের মুখে পড়েন উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম।

জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও লালন শাহ হলের দক্ষিণ ব্লকের কাছে পরপর দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মাত্র দুই মিনিট পর একই স্থানে চারটি বিস্ফোরণ ঘটে। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের কক্ষ সংলগ্ন এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন দলটির নেতাকর্মীরা। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রামদা, লাঠি, স্ট্যাম্প, হকি স্টিকসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হল এলাকায় মহড়া দেয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক কর্মীদের হলে পাঠান।

ছাত্রলীগের কর্মীরা ওই রাতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডি তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতা করেনি বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বুধবার অনুষদ ভবনে প্রক্টর কার্যালয়ের নিচে প্রায় আধা ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন তারা। এরপর প্রশাসন ভবনের সামনে সারিবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে একটি সেমিনার থেকে বের হওয়ার সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলার শিকার হন উপাচার্য। এ সময় তারা প্রক্টরাল বডির অসহযোগিতার বিষয়ে উপাচার্যকে প্রশ্ন তোলেন।

পরে উপাচার্য তার কার্যালয়ে গেলে তারা হট্টগোল করেন। এ সময় উপাচার্য প্রফেসর মাহবুবুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর জাহাঙ্গীর হোসেন, পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা প্রক্টরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।

পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আরও হট্টগোল করলে উপাচার্য বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি চেয়ার ছেড়ে কর্মীদের সঙ্গে কড়া কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে তিনি সভাকক্ষে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, মূলত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে কথা বলেছি। পিএস ও প্রধান প্রকৌশলী বিএনপি-জামায়াত ও পরিচিত দুর্নীতিবাজ হওয়ায় তাদের দেখে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এর পরই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ঘটনার তদন্তে আসা ইবি থানার দুই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার দুই জায়গার আশেপাশের লোকজন আওয়াজ পেলেও কাউকে আসা-যাওয়া দেখতে পাননি।

পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম। ছাত্রলীগ যা করছে, এটা তাদের ব্যবসা কি না বুঝতে পারছি না। প্রশ্ন আসছে কেন অভিযোগ আসতে শুরু করেছে গত ১৫/২০ দিন থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *