বগুড়ায় রেলস্টেশন থেকে শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ

0

বগুড়ায় রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মার্কেট কার পার্কিং এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূমি সম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেবের নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

অভিযানের শেষ মুহূর্তে রায়হান আলী নামে এক রেলওয়ে কর্মচারীকে মারধর করে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা। পরে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের অভিযোগ- বগুড়া রেলস্টেশনে প্রধান বুকিং সহকারী হিসেবে কর্মরত রায়হান আলী উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে স্টেশনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অব্যবহৃত ১৯৫.০০০ বর্গফুট জায়গা রেলওয়ে এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টকে একটি মার্কেট তৈরির জন্য লিজ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বগুড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে হাজার হাজার দোকান নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় আবদুল মান্নান আকন্দ নামের এক ঠিকাদারকে। পরিকল্পিত নকশায় মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১২ হাজার ৬০০ বর্গফুট জায়গা খালি রাখা হলেও ঠিকাদার আবদুল মান্নান আকন্দ ওই জায়গায় অবৈধভাবে শতাধিক দোকান নির্মাণ করেন। এরপর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি ও ঠিকাদার যৌথভাবে দোকান বরাদ্দ করে প্রতিটি দোকানের জন্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেয়। পরে দোকানীরা তাকে সরিয়ে দিতে বললেও তিনি শোনেননি। এ কারণে বুধবার তাদের উচ্ছেদ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উচ্ছেদ অভিযানের সময় আবদুল মান্নান আকন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নকশা সংশোধনের প্রস্তাব করেন এবং দোকানগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অনুরোধ করেন। কিন্তু রেলের কর্মকর্তারা তার কথায় কর্ণপাত করেননি। টাকা দিয়ে কেনা দোকানের মালিকরা উচ্ছেদের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা উচ্ছেদ অভিযানের জন্য বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী রায়হান আলীকে দায়ী করেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে দোকান মালিকদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ দোকান মালিকরা তাকে মারধর করে। এ সময় উচ্ছেদ অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে।

রায়হান আলী বলেন, পার্কিং লটে অবৈধভাবে নির্মিত দোকান অপসারণের জন্য কল্যাণ ট্রাস্টকে একাধিকবার চিঠি দিলেও ঠিকাদার তা কর্ণপাত করেনি। এ কারণে রেলওয়ে নিয়মানুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এখানে আমার কোনো ভূমিকা নেই।

নকশা ছাড়া দোকান নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদার আবদুল মান্নান আকন্দ বলেন, ২০১৭ সালে জায়গাটি লিজ নেওয়ার সময় রেলওয়ের পক্ষ থেকে কোনো নকশা দেওয়া হয়নি। দোকান নির্মাণের পর নকশা করা হয়। তিনি বলেন, রেলওয়ের কর্মকর্তারা নকশা সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন। নকশা সংশোধন করা হলে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের দোকান আগের জায়গায় নির্মাণ করা হবে।

বগুড়া রেলওয়ের কানুনগো গোলাম নবী জানান, নকশায় গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রাখা ১২ হাজার ৬০০ বর্গফুট জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে নকশা পরিবর্তন করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *