রাতজাগা রেস্টুরেন্ট
রাতে ঢাকায় কাজ করেন এমন অনেকেই ক্ষুধার্ত। আমি রান্না করে খেতে চাই না। কোথাও খেতে গেলে ভালো লাগবে। কখনও কখনও ভোজনরসিকরা রাতে হোটেল এবং রেস্তোঁরাগুলিতে খাবারের সন্ধান করে। কিন্তু রাত নামলেই শহরের খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যায়। অনেকেই জানেন না- ঢাকায় এমন কিছু রেস্টুরেন্ট আছে যেগুলো রাতে খোলা থাকে।
ঢাকা শহরে কিছু রেস্টুরেন্ট আছে, যেগুলো গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। কিছু রেস্টুরেন্ট ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। আপনি অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন এবং আপনার পছন্দের খাবারটি পেতে পারেন। ইচ্ছে হলে গিয়ে খাওয়া- সেটাও সম্ভব।
যারা সাধারণত রাতে ঢাকার এই রেস্টুরেন্টে আসেন, তারা কী খেতে চান? বা আপনি সেখানে কি খাবার পাবেন?
গুলশান ২ নং এ অবস্থিত প্রিমিয়াম সুইট রেস্টুরেন্ট। সেখানে খেতে গেলে বাঙালি আবহ পাবেন। তারা মাটির হাঁড়িতে আপনার সামনে খাবার পরিবেশন করবে। নিয়ে আসবে সুস্বাদু প্রিয় খাবার। রেস্টুরেন্টটির ব্যবস্থাপক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের খাবারের চাহিদা মেটাতে রাত ১২টা পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট খোলা রাখি। তবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকাল ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে।’
যারা রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন, তারা কী খাবার বেশি খান? ‘বাঙালিরা ভোজনরসিক। তারা আচারি খিচুড়ি, কালাভুনা, ইলিশ ভাজা, পরোটার সাথে অনেক খায়। এ ছাড়া বিদেশিরা আসা ৭ ধরনের কাবাব বেশি খান। আছে নান, লাচ্ছা পরাটা, রুমালি রুটি, গরুর পা, গরুর ভুন্ডি। আমাদের সব খাবারই বিখ্যাত। বিশেষ করে দেশের বিখ্যাত সব মিষ্টি বিক্রি করি। প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ লোক আসে, ছুটির দিনে এই সংখ্যা বেশি হয়। এছাড়াও, আমরা দেশের প্রিয় সব অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিই।
রেস্তোরাঁটির নতুনত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন পর পর খাবারের ধরন পরিবর্তন করি। কিছু খাবার আছে যেগুলো মৌসুমী, সেসব খাবার অন্তর্ভুক্ত করি। আমরা শীঘ্রই কিছু নতুন খাবার নিয়ে আসব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্রেতারা প্রিমিয়াম ক্রেতা। আমরা খুব বেশি প্রচার করি না। ফেসবুকে শুধু কিছু প্রচার আছে। যারা আমাদের কাছ থেকে একবার খেয়েছেন, তারা তাদের আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের কাছে আমাদের রেস্টুরেন্টের প্রশংসা করেন।
বনানীতে অবস্থিত পিজ্জা মিলানো বিডির ম্যানেজার আদিত্য কুমার বলেন, ‘পিজ্জা বিদেশি খাবার হলেও মানুষের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। আমাদের এখানে পিজ্জার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমি মনে করি দেশের মানুষ অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি পিৎজা খায়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্টান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। যে কেউ এসে খেতে পারেন, আবার অর্ডার করলেও আমরা গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দিই। তবে যত ক্রেতা আসবেন তার চেয়ে বেশি ক্রেতা তাদের ঠিকানায় পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন।
পান্থপথে অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁ গ্রুবস জানিয়েছে যে রাতের খাবারের জন্য মানুষের চাহিদা সম্পূর্ণ আলাদা। রাতে যারা এসে খাবার অর্ডার করেন তারা পিৎজা, পাস্তা ও চিকেন আইটেম পছন্দ করেন। এই রেস্তোরাঁটি বিকেল ৩টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তারা আরও বলেন, তারা বেশিরভাগ খাবারের অর্ডার মধ্যরাতে পৌঁছে দেন। এই রেস্তোরাঁর ব্যবসা প্রতি মাসে সাত থেকে আট লাখ টাকা। তাদের খাবারের এই ব্যবসা নির্ভর করে গ্রাহকদের ভিন্ন স্বাদের ওপর। তারা আরও বলেন, প্রতি ৬ মাস অন্তর গ্রাহকের জন্য নতুনত্ব নিয়ে আসে। তারা গ্রাহকের চাহিদা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করে। কারণ তারা বোঝেন, তাদের চাহিদাও ক্রেতার ভালো।
এছাড়া আরও কিছু রেস্তোরাঁ প্রায় ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে ভাল খাবার সরবরাহ করে। এখানকার বার্গার, স্যান্ডউইচ ও শর্মা বেশ সুস্বাদু। সকালের নাস্তাও খুব জনপ্রিয়। রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘ধাবা’ রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কিন্তু বনানীর ধাবা সারারাত খোলা থাকে। এখানে বিভিন্ন স্বাদের সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।