আজ শেখ হাসিনা-মোদী বৈঠক।বাংলাদেশ ভারতের উদ্বৃত্ত তেল চায়

0

বাংলাদেশ ভারতের উদ্বৃত্ত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব দেবে। মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে এই প্রস্তাব তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ভারতের সঙ্গে জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে যেসব কৌশলগত পণ্য আমদানি করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভারতের উচিত বাংলাদেশকে জানানো। অনেক দেশ জ্বালানি সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ বিষয়েও আলোচনা হবে। ভারতের কাছে যদি উদ্বৃত্ত জ্বালানি থাকে, তাহলে কীভাবে তা সর্বসম্মত ভিত্তিতে সরবরাহ করা হবে তা নিয়েও আলোচনা করা হবে। এটা নিশ্চিত হলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে বাংলাদেশ।

রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা যাবে না- এটা ঠিক নয়। কিন্তু রাশিয়ার যে কারিগরি সমস্যাগুলো আছে সেগুলো এখন যাচাই করা হচ্ছে। সেই সাথে, কীভাবে এটির জন্য অর্থ প্রদান করা হবে তা দেখার বিষয় রয়েছে। যদি ভারতের উদ্বৃত্ত জ্বালানি থাকে, এবং যদি তা সহজ শর্তে পাওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশকে অবশ্যই এই জ্বালানি সংগ্রহের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভারত সফরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সংযোগের ওপর জোর দেওয়া হয়। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে অসামান্য বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত, ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশসহ সমগ্র অঞ্চলের জনগণের কল্যাণে যেসব প্রকল্প করা যায় তা আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। বেশ কিছু প্রকল্প বিলম্বিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ নেপাল এবং ভুটান বাংলাদেশী বন্দর ব্যবহার করে।

তিনি বলেন, এর বাইরে ইউক্রেন-রাশিয়া চলমান সংকট সমগ্র বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি তুলে ধরে যে কীভাবে আমরা নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে পারি যাতে আমরা এই সংকট মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে পারি। মূল সভায় বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনে অশান্তির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। রাখাইনের পরিস্থিতি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। ভারত বলেছে যে তারা রাখাইনে কিছু অস্থিরতা লক্ষ্য করছে। এ অবস্থা কারো জন্যই ভালো নয়।

বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক টুইট বার্তায় বলেন যে দুই দেশের নেতাদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক এবং যোগাযোগের মাত্রা দুই প্রতিবেশীর গভীর অংশীদারিত্বের প্রমাণ।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি একটি টুইটে বলেছেন যে তারা এই বছরের ১৬ ডিসেম্বর গাড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের জন্য নির্দিষ্ট সঞ্চালন লাইনে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

আজ দিনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি ভবনে যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখানে অনুষ্ঠান শেষে শেখ হাসিনা রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর তিনি হোটেলে ফিরে হায়দ্রাবাদ হাউসে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *