ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামে আগুন

0

আমিষের চাহিদা পূরণে ডিম এবং ব্রয়লার মুরগি স্বল্প আয়ের মানুষের দারুণ পছন্দ। তবে বাজারে এ দুটি পণ্যের দামেও আগুন লেগেছে। রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। প্রতিটি ডিমের দাম ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা!

ব্রয়লার মুরগির দাম রেকর্ড না হলেও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এক কেজি সর্বোচ্চ ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাগামহীন দামের কারণে অনেকেই মেনু থেকে ব্রয়লার মুরগি বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ডিমও আগের তুলনায় কম কেনা হয়।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে একটি হালি (চার) ডিম কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশিদ। দাম বাড়ায় এক ডজন না কিনে ৫৫ টাকায় একটি হালি কিনেছেন বলে জানান তিনি। শুধু ডিম নয়, খরচ বাঁচাতে অন্যান্য জিনিসেও একই রকম কাটছাঁট করা হচ্ছে।

রিপন মিয়া মা রোকেয়া ব্রয়লার হাউস থেকে প্রতি কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি কিনেছেন ২০০ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়লেও মুরগির দাম এক লাফে এত বাড়ার কোনো কারণ নেই। এক সপ্তাহ আগে দেড়শ টাকায় ব্রয়লার কিনতে পেরেছিলাম। কি হলো প্রতি কেজি ৫০ টাকা বাড়াতে হবে?’

এ বিষয়ে একজন বিক্রেতা জানান, ডিজেলের দাম বাড়ায় মুরগি আনতে তাদের গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। মুরগির খাবারের দামও বেড়েছে। এছাড়া মুরগি মারা যায়। সব মিলিয়ে লাভ গুনতে হবে।

পণ্য দুটির দাম কতটা অস্থিতিশীল তা সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদর প্রতিবেদন দেখলেই বোঝা যাবে।

কোম্পানির তথ্যমতে, গত ২ আগস্ট ব্রয়লার মুরগির কেজির দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা। আর শনিবার বিক্রি হয়েছে ১৮৫ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। টিসিবি জানায়, ১১ দিনে মুরগির দাম ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা বেড়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।

এ ছাড়া সোনালি মুরগির দামও বেশি। ১০ দিন আগে এই জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছিল ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়, বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকায়।

দেশের ইতিহাসে এক ডজন ডিম কখনো দেড়শ টাকা ছুঁতে পারেনি। দরিদ্রদের ‘মাংস’ হিসেবে পরিচিত এই খাদ্যপণ্যের প্রতি ডজনের দাম এখন এলাকাভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। তবে এক হালি কিনলে ৫৫ টাকা রাখা হয়। টিসিবির তথ্যমতে, এক সপ্তাহ আগেও খামার থেকে এক ডজন ডিম ১২০ থেকে ১২৬ টাকায় কেনা যেত। সে অনুযায়ী এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

টাঙ্গাইলের ব্রয়লার মুরগি ও ডিম উৎপাদনকারীদের একজন সোহেল রানা বলেন, মুরগি পালনে মোট খরচের ৭৫ শতাংশই খাবারের জন্য। সম্প্রতি খাবারের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া অনেক কৃষক লোকসানের কারণে উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। কেউ কেউ ব্যবসাও ছেড়ে দিয়েছেন। এ কারণে দাম বাড়ছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার মূল কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বর্ধিত দাম কৃষকরা কতটা পাচ্ছেন, সেটাও দেখতে হবে। খামার থেকে খুচরা পর্যায়ে থাকা মধ্যস্বত্বভোগীরাও এতে লাভবান হচ্ছেন। দাম বাড়ার পেছনে এটিও একটি কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *