১৬ জেলায় ডিজিটাল সনদ ও পরিচয়পত্র পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।বৃহস্পতিবার থেকে বিতরণ শুরু

0

২০১৪ সালে, সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে তাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও আইডি কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চলতি বছর  থেকেই প্রচলিত পদ্ধতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ ও পরিচয়পত্র (পরিচয়পত্র) প্রদান প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ফলে সরকার নির্ধারিত চিকিৎসা ও যাতায়াতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সনদ ও পরিচয়পত্র না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। তবে আট বছর পর অবশেষে গেজেটের আওতায় থাকা প্রায় দুই লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদ দিতে যাচ্ছে সরকার।

প্রথম ধাপে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের ১৬টি জেলার ৪৯ হাজার ৮৭৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদ দেওয়া হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ১৬টি জেলার সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন এবং ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। জেলাগুলো হলো- ঢাকা, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মেহেরপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নড়াইল ও গাজীপুর।

দেশের আরও ৪৮টি জেলায় একইভাবে দেড় লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পরিচয়পত্র ও সনদ দেওয়া হবে। দুই মাসের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে মন্ত্রণালয়। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের মাধ্যমে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এরই মধ্যে ১৬টি জেলার প্রতিটি উপজেলা কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদপত্র পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশিত ডিজিটাল সনদ ও পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে। প্রথম ধাপে ১৬টি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলার মুক্তিযোদ্ধাদেরও এ সুবিধার আওতায় আনা হবে। মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা জীবিত আছেন তারা সনদ ও পরিচয়পত্র উভয়ই পাবেন। তবে যেসব মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন, তাদের শুধু ডিজিটাল সনদ দেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কেউ যাতে ডিজিটাল সনদ ও পরিচয়পত্র জাল করতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিচয়পত্রে ১৪ ধরনের ডিজিটাল সার্টিফিকেট এবং ১২ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুগলে গিয়ে ‘ফ্রিডম ফাইটার ভেরিফায়ার’ অ্যাপের মাধ্যমে এই সনদ ও পরিচয়পত্রের অনন্য নম্বর আপলোড করলে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও জাতীয় সঙ্গীত শোনা যাবে। এতে আরও রয়েছে থ্রিডি লোগো, দুটি কিউআর কোড, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ফুলের শ্যাডো অ্যামবুশ, বীরমুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিগত প্রোফাইল, ইস্যুকারী মন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষর, ওয়াটারমার্ক, জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন নির্ধারিত আলতামার্ক। যার অনেক কিছুই খালি চোখে দেখা যায় না। এই সনদ ও পরিচয়পত্রের ফটোকপি করা হলে কপিটি অসংখ্যবার কপি হিসেবে উল্লেখ করা হবে, যা খালি চোখে দেখা যাবে না। মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এগুলো জাল করার সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *