ইতালিতে বছরে তিন হাজার বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হবে: রাষ্ট্রদূত

0

বাংলাদেশ থেকে বিমানযোগে লিবিয়া। সেখান থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইতালি। এরপর মাসে লাখ টাকা বেতনে চাকরি। কোনো ঝুঁকি নেই। আগে যারা গেছেন তারা সবাই ভালো আছেন। ইতালির শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী দেশে টাকা পাঠিয়ে দালালদের প্রলোভনে বাড়ি ছেড়েছেন। বাস্তবতা হলো জনপ্রতি ১০-১২ লাখ টাকা খরচ করেও ইতালি যাওয়া সম্ভব হয়নি; বরং মানব পাচারকারীদের অত্যাচারে সাগরে প্রাণ হারিয়েছে শত শত যুবক।

সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা মানেই মৃত্যুর ঝুঁকি- আজ শরীয়তপুর পৌর মিলনায়তনে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক আলোচনা সভায় এলাকাবাসী এসব কথা বলেন।

আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনের উপস্থিতিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জনসচেতনতা ছাড়া মানব পাচার বন্ধের কোনো উপায় নেই।

তিনি বলেন, এখন থেকে তিন হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক বৈধভাবে ইতালিতে কাজ করতে পারবেন। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

মতবিনিময় সভায় যারা লিবিয়ায় দালালদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বা সাগরে ডুবে মারা গেছেন তাদের স্বজনরা এবং নিখোঁজদের স্বজনরা মতবিনিময় সভায় তাদের দুঃখের কথা বলেন।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ লোনসিং গ্রামের কামাল মুন্সি তিন বছর আগে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন। তিনি এখন নিখোঁজ। ছেলেকে খুঁজতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াটার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন কামালের মা নাছিমা আক্তার।

তিনি জানান, তার ছেলে কৃষিকাজ করত। বেশি উপার্জনের আশায় স্থানীয় দালাল হানিফ সরদারের মাধ্যমে সাড়ে চার লাখ টাকায় লিবিয়া যান। এরপর হাসানকে ইতালি যাওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা দেন আরেক বাংলাদেশি। কামাল গত ১ জুলাই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে একটি নৌকায় উঠেছিলেন। ৩ জুলাই দালাল হাসান ফোন করে জানান যে কামাল স্ট্রোকে মারা গেছেন। লাশ দেশে পাঠাতে টাকা লাগবে।

এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন নাছিমা আক্তারকে আশ্বস্ত করে বলেন, তার ছেলের খোঁজে মন্ত্রণালয় কাজ করবে। তিনি বলেন, অবৈধভাবে বিদেশে না যেতে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, দালালরা যাতে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে না পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *