কুলাউড়ায় সরকারি টাকায় রাস্তা নির্মাণে চা বাগানের পাহাড় কাটার অভিযোগ

0

কুলাউড়ায় লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই আবাদের পাহাড় কেটে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ বাগান শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে সড়কের কাজ স্থগিত রাখারও নির্দেশ দেন প্রশাসনের লোকজন।

চা বাগানটি উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে। সম্প্রতি কুলাউড়ার সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাগান ও কাবিখা সীমান্ত দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণের অনুমোদন দেন। এরপর প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আপ্তাব বাগানের ভেতরে কাজ শুরু করেন। পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করেই খননকারক দিয়ে বেশ কিছু উঁচু-নিচু ঢিবি কেটে প্রায় ৩৫০০ ফুট লম্বা ও প্রায় ১০ ফুট চওড়া নতুন রাস্তা মাটি ও ইট দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে।

প্রকল্পের লোকজন বাগান কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করলেও নিরাপত্তার সমস্যা ও বাগানের মূল্যবান গাছ চুরির আশঙ্কায় কর্ণপাত করেননি। উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ইউএনও মাহমুদুর রহমান খোন্দকার ও ওসি আবদুচ ছালেক ঘটনাস্থলে যান। এ সময় বাগানের ব্যবস্থাপক মাবুদ আলী, ব্রাহ্মণবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মামদুদ হোসেন পঞ্চায়েত কমিটির লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

হা-মীম গ্রুপের মালিকানাধীন বাগানের কর্মকর্তারা জানান, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যে কোনো সময় বাগানের ভেতর থেকে গাছপালা ও মাটিসহ অনেক জিনিস চুরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আপ্তাব জানান, রাস্তার কাজ প্রায় অর্ধেক শেষ। বাগানের সীমানা এলাকায় ইট ভাটার কাজ ঝুলে আছে। এমপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করছেন তারা। বাগানের ভেতরে কাজ করার কোনো অনুমতি নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য অনুমতি নিয়েছেন কি না তা জানি না।

চা বাগানের ব্যবস্থাপক মাবুদ আলী জানান, বাগানের ভেতরে রাস্তা তৈরি করতে হলে জেলা প্রশাসক ও বাগান মালিকের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু এ সড়ক নির্মাণের কোনো অনুমতি না নিয়ে তারা জোরপূর্বক কাজ শুরু করে। এতে বাগানের শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সোমবার সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, প্রকল্পের শর্তের বাইরে কাজ করা হলে তার দায়িত্ব প্রকল্প কমিটির। মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মাহমুদুর রহমান বলেন, আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাগান মালিকের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। চাকরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৫ আগস্টের পর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *