বুস্টার ডোজে গতি নেই সংক্রমণ ঊর্দ্বমুখী

0

বিভিন্ন উৎস থেকে করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে সরকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। তবে বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ প্রয়োগে দেশটি এখনো অনেক পিছিয়ে। এখনও, লক্ষ্য জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ বুস্টার ডোজ ভ্যাকসিনের বাইরে। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন হাতে থাকা সত্ত্বেও দ্রুত সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার সরকারের পরিকল্পনা এখনও দৃশ্যমান নয়।

করোনা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে দেশের ৭০ শতাংশ জনসংখ্যাকে যত দ্রুত সম্ভব বুস্টার ডোজের আওতায় আনতে হবে। অন্যান্য দেশ এই পদ্ধতির উপর বেশি জোর দিচ্ছে।

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার দেশে দুই হাজারের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতিতে ছয় দফা আদেশ বাস্তবায়নের জন্য আবারও সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়েছে সরকার। দেশে করোনা সংক্রমণ এখন ১৫ শতাংশের বেশি। সংক্রমণের হার বাড়লে কয়েকদিনের মধ্যে দেশে করোনার চতুর্থ তরঙ্গ শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে সরকার। সে সময় লক্ষ্য ছিল দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায় তা ৭০ শতাংশে পরিবর্তন করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিন মাসের বেশি সময় ধরে করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় সবার মধ্যে ভ্যাকসিন নেওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনীহা দেখা দিয়েছে। যা সম্প্রতি টিকা বুস্টার ডোজ ক্যাম্পেইনে প্রভাব ফেলেছে। সাত দিনে দেড় কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও মাত্র ৯৮ লাখ মানুষকে বুস্টার ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, কয়েকটি দেশ তৃতীয় ডোজ শেষ করে চতুর্থ ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। ইউনাইটেড কিংডমের প্রায় ৯৩% লোকের শরীরে অ্যান্টিবডি রয়েছে, যেমনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোস্তাক হোসেন বলেন, সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মতো বুস্টার ডোজ পরিচালনায় ততটা সক্রিয় নয়। এ কারণে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করলেও বুস্টার ডোজ অনেক পিছিয়ে। দু’দিনের মধ্যে বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে এ দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তবে এখন থেকে এ বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হক স্বীকার করেছেন, বুস্টার ডোজ নিয়ে এখনই কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেই। “আমরা সম্প্রতি একটি বড় প্রচারণা করেছি,এবার নতুন পরিকল্পনা করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে এ বিষয়ে আপনাদের জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *