পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে ১৭ অর্থনৈতিক অঞ্চল

0

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগকে ঘিরে  মহাপরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। কোম্পানিটি এই তিনটি বিভাগের ২১টি জেলায় ১৭টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) স্থাপনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও যুক্ত হবে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়ন হবে। অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে বেজা।

এদিকে বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলায় ২০৫ একর জমি নিয়ে মংলা ইজেড স্থাপন করেছে বেজা। অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনটি শিল্প স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে জমি বরাদ্দের চুক্তি হয়েছে। এর পাশে ১০৫ একর জমিতে আরেকটি ইজেড স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া বাগেরহাট জেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন ১,৫৪৭ একর জমি নিয়ে একটি পর্যটন পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে বেজারের।

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও গোসাইরহাট উপজেলায় দুটি ইজেড স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে বেজা গভর্নিং বোর্ড। এ দুটির আয়তন হবে প্রায় ৫২৫ ও ৬ একর। এছাড়া মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলায় এক হাজার ১২৫ একর জমিতে ইজেড স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলায় আনুমানিক ৮ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রায় ২০০ একর জমিতে ইজেড স্থাপনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় একটি ইজেড স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। আয়তন হবে প্রায় ২০৬ একর। এছাড়া জেলার তেরখাদা ​​উপজেলায় ৫০৯ একর জমি নিয়ে আরেকটি এলাকা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজার পরিচালনা পর্ষদ।

ইতোমধ্যে মাগুরার শ্রীপুর ও সাতক্ষীরার সদর উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। হিজলা উপজেলায় ১ হাজার ৮২৯ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন রয়েছে। ভোলা সদরেও ইজেডের পরিকল্পনা রয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, মংলায় বাস্তবায়নাধীন দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিগগিরই শিল্প নির্মাণ শুরু হবে। এতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় ৩৬২ একর জমির ওপর কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে। বেজা ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ ৩৬২ একর জমির মালিকানা নিয়েছে। এছাড়া ঢাকার নবাবগঞ্জের মাওয়ায় প্রায় ৬০০ একর জমি নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের পরিকল্পিত শিল্পায়ন বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আরো গতিশীল হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *