সেতুতে ওঠা নিষেধ, ফেরি চলছে না, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকদের

0

গত শনিবার স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। রোববার সকালে সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিনে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে সোমবার থেকে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সেতু কর্তৃপক্ষ। তবে সেতু পারাপারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ও ফেরি চলাচল না করায় বিপাকে পড়েছেন মোটরসাইকেল চালকরা।

আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত মাওয়া টোল প্লাজা এলাকায় বাস, প্রাইভেটকার, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন টোল প্লাজার সামনে আসছে। অপেক্ষা না করেই এসব যানবাহন টোল পরিশোধ করে সেতুতে উঠে জাজিরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। ভোগান্তি ছাড়াই সেতুতে উঠতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রী ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। তবে অনেক মোটরসাইকেল চালক মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞার কথা না জেনেই সেতু ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সেতুর সঙ্গে জড়িতরা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সেতুর মাওয়া প্রান্তে কোনো চাপ নেই। মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ রয়েছে। ব্রিজের নিচে না যাওয়া, ছবি তোলা-এসব কাজে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সেতু কর্তৃপক্ষের টহল দল সেতুতে টহল দিচ্ছে। গত দুই দিনে মাওয়া হয়ে ১৫ হাজার যানবাহন থেকে প্রায় ২ কোটি ৫ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।

এদিকে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পর গত সোমবার সকাল থেকে সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে কুঞ্জলতা শিমুলিয়া ঘাট থেকে শেষ ফেরিটি ছেড়ে যায় শরীয়তপুরের মাঝিকন্দি ঘাটের উদ্দেশ্যে। এরপর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো ফেরি ছেড়ে যায়নি। সেতু ও মোটরসাইকেল পার হতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মোটরসাইকেল চালকরা।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মাওয়া টোল প্লাজার সামনে আসেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। এ সময় সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন টোল প্লাজা থেকে মোটরসাইকেল চালকদের ফিরিয়ে দেন। তাদের একজন ড. মশিউর রহমান। তিনি মিরপুরে চাকরি করতেন। তার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ে। মশিউর বলেন, ব্রিজের ওপর মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ জন্য তিনি সেতু এলাকায় আসেন। তাকে সেতু থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি শিমুলিয়া ফেরি টার্মিনালে যান। সেখানে গিয়ে দেখি, ফেরি চলছে না। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আবার টোল প্লাজার সামনে আসেন।

মশিউর বলেন, আমি মোটরসাইকেলে সেতুতে উঠতে পারি নাই। এখন চেষ্টা করব মোটরসাইকেলটি পিকআপ ভ্যানে করে সেতু পার হতে পারি কিনা। ‘

আরেক মোটরসাইকেল চালক এসএম রিয়াদ হোসেন জানান, তিনি রাজধানীর বনশ্রীতে থাকেন। মাদারীপুর পুরাতন বাজার এলাকায় যান। তার ভাষ্য, সারাক্ষণ ফেরিতে যাচ্ছেন। এখন ফেরি চলাচল বন্ধ। সেতুতে উঠতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কি করবে বুঝতে পারছে না।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ঘাটে ছয়টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে চারটি চালু রয়েছে। পদ্মা নদীতে এখন প্রবল স্রোত। সাবমেরিনে ফেরি আটকা পড়েছে। সকাল থেকে ঘাট থেকে ১৫-২০টি মোটরসাইকেল আসা-যাওয়া করছে। যদি একটি ফেরি একটি ফেরি ভর্তি করতে ঘাটে আসে, তবে ফেরিটি ঘাট ছেড়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *