সরেজমিন: মাওয়া প্রান্ত।’ফেরির কষ্টের দিন শেষ, শান্তি আর শান্তি’
আরিফুল ইসলাম ও আমিন বিশ্বাস। কর্মরত দুই যুবক। বন্ধুর পথ ধরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে পদ্মার কোলে আসেন তিনি। শনিবার সকালে টঙ্গী থেকে মাওয়া রওনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর মাওয়া সড়কে বাস চলাচল করছে। তবুও তারা হাল ছাড়েননি। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো ছোট যানবাহনে পদ্মাপাড়ে পৌঁছান। গতকালও এমন বেদনা-কষ্ট নিয়ে পদ্মা সেতুতে হাজারো মানুষ এসে আনন্দ উল্লাস করেছেন। ট্রাকের সাউন্ডবক্সে নদীর ধারে বিভিন্ন গান-বাজনা চলছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাওয়া শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের একটি টং দোকানে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার সময় কথা হয়। আরিফুল বলেন, ‘ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে পদ্মাপাড়ে এসেছি। বৃদ্ধ বয়সে আমার নাতি-নাতনিদের বলতে পারব, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন আমি নদীর পাড়ে ছিলাম।
আমিনের বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি বলেন, ‘পদ্মা নদীর ওপর সেতু হবে কল্পনাও করিনি। এই বয়সে কতবার ফেরি পার হয়ে বাড়ি যেতে হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই। ফেরি ঝামেলার দিন শেষ, শান্তি আর প্রশান্তি। এখন সময় বাঁচবে, কষ্ট থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ করে দেখিয়েছেন সদিচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুর ইসলাম মোল্লা জানান, সকালে ডেমরার বাড়ি থেকে মাওয়ায় আসেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ। তিনি বলেন, আজ থেকে দক্ষিণের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকায় কাঁচামালবাহী যানবাহনের ফেরির জন্য ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষার অবসান হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে আসা শিমুল মিয়া জানান, ভোরে রওনা হয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় মাওয়ায় পৌঁছান। তিনি বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীর পর থেকে বাস বন্ধ থাকায় আসা যাওয়া খুবই কষ্টকর। তার পরেও এখানে এসে ভালো লাগছে। নিজের চোখে সেতু দেখে কষ্ট ভুলে গেছি। ‘
মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু পার হয়ে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছান। মানুষের প্রবাহ বন্ধ করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। সেতুতে সেলফি তোলেন অনেকে। মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, লোকজন ব্রিজের দিকে ছুটে আসেন। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি। এর আগে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।