পদ্মা সেতু আমাদের গর্ব, যোগ্যতা ও মর্যাদার প্রতীক : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রমত্তা পদ্মার বুকে পদ্মা সেতু বাঙালির গর্ব, যোগ্যতা ও মর্যাদার প্রতীক।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে মঞ্চে ওঠেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এর আগে উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লাখো মানুষের সঙ্গে আজ আমি আনন্দিত, গর্বিত ও অভিভূত। অনেক বাধা উপেক্ষা করে ষড়যন্ত্রের জাল ভেঙ্গে প্রমত্ত পদ্মার বুকে আজ বহু লোভনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
‘এই সেতুটি শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহা কংক্রিটের অবকাঠামো নয়, এটি আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার, আমাদের সামর্থ্য এবং আমাদের মর্যাদার প্রতীক। এই সেতুটি বাংলাদেশের মানুষের। এর সাথে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহস, আমাদের সহনশীলতা এবং আমাদের অধ্যবসায় জড়িত। শাবাশ বাংলাদেশ, আমরা মাথা নত করব না। আমরা মাথা নত করিনি। যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের সেতু নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে, কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। অবশেষে অন্ধকার ভেদ করে আলোর মুখ দেখলাম। লাল, নীল, সবুজ ও সোনালি বাতি জ্বলছে। পদ্মার ৪১টি স্প্যান যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, বাঙালিদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না। আমরা জয়ী হয়েছি।
পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে দেশ-বিদেশে চলছে নানা সমালোচনা। অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে পদ্মা সেতু নির্মিত হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অগ্রগতি থমকে যাবে।
সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েনি। বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছি, আমরাও পারি। পদ্মা সেতু তাই শুধু নয়। নিজের যোগ্যতা এবং বাঙালির যোগ্যতা প্রমাণের সেতু, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও।বাংলাদেশের মানুষ আমার সাহসের ঠিকানা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের মান নিয়ে কোনো আপস করা হয়নি। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সেতু। সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে সম্পূর্ণ নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর ভিত্তি এখনও বিশ্বের সবচেয়ে গভীরে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি দুর্ভোগ লাঘব হবে, অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, পরামর্শক, ঠিকাদার, প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, শ্রমিক, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।