মিঠামইনে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

0

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কিশোরগঞ্জের মিঠামিন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। হাওর বেষ্টিত এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

মিঠামিন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ কামাল বলেন, উপজেলার ঘোরাউড়া নদীর তীরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পল্লীতে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৫৯টি বাড়িও ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত তিন ফুট পানি বেড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। মিঠামিন সদর ইউনিয়নের নবাবপুর, মিস্তা ও খিলাপাড়া নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, চমকপুর গ্রামের দক্ষিণের বেড়িবাঁধ ডুবে গেছে। ঘাগড়া, খালাপাড়া ও চমকপুরের কবরস্থানে পানি ঢুকে গেছে। ঘাগরা শ্মশানে জল ঢুকেছে। এছাড়া শিহারা, ধোবাজোড়া, দাইনগাঁও, সুলতানপুর, হাবিবপুর ও আলগাহাটি গ্রাম তলিয়ে গেছে।

তিনি জানান, ধোবাজোড়া, শিহারার প্রায় আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধ পানিতে তলিয়ে গেছে এবং ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। নিরাপদ আশ্রয় না পেয়ে অনেক গৃহস্থ তাদের গবাদি পশু কম দামে বিক্রি করছে।

অন্যদিকে, বন্যায় ঘাগড়া বাজার থেকে চমকপুর মাদ্রাসা পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।

 গোপদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আকাশ জানান, তার ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ওইসব গ্রাম থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পানির উচ্চতা আরও বাড়লে আরও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হবে।

ঢাকি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে মডেল চরপাড়া, নাতুনহাটি, পূর্বহাটি, শান্তিপুর, মাহমুদপুর, কুলাহানি, গোবিন্দপুর, সোনাপুর ও আটপাশা গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কেওরজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, তার ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

গত দুই দিনে কুড়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেমন্তগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

 বন্যা কবলিত রাণীগঞ্জ, অলিপুর, আশুপুর, হেমন্তগঞ্জ, মফিজনগর, নাগরপুর, কুড়াকান্দি, ফুলপুর ও নাসিরপুর গ্রামের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

কাটখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের খাটখাল বাজার, খুরশিদপুর, শান্তিপুর, ধলার গাও, আলেকপুর ও মজিদপুর গ্রামের বাসিন্দারা গবাদিপশু, ধানসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

মিঠামিন উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোল্লা খলিলুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিজ কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।

মিঠামিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *