বিশ্ব বাবা দিবস আজ।’পৃথিবীতে খারাপ মানুষ থাকলেও খারাপ বাবা নেই’
আপাতদৃষ্টিতে গম্ভীর খোলের আড়ালে তার অন্য রূপ আছে। বাইরেরটা শক্ত খোলসে আটকে আছে আর ভেতরটা নরম নারকেলের মতো। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ তার বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকেই উপরোক্ত কথাগুলো লিখেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই। বাবা মানে বটগাছ, সে একাই একটা প্রতিষ্ঠান। বাবা এমন একজন ব্যক্তি যিনি সবসময় পাশে থাকেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে ছায়ার মতো।
হিমালয় যেমন অনন্তকালের জন্য মেঘকে স্নেহের সাথে পরিধান করেছে, তেমনি সূর্য, বৃষ্টি, সমস্ত পিতার দুঃখ এবং আনন্দ তাদের সন্তানদের দূরে রাখে। করোনা মহামারীর সময়ে যেখানে স্বজনরা আক্রান্তদের বাদ দিচ্ছেন, সেখানে অনেক বাবাকে করোনা আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটতে দেখা গেছে।
কবি-সাহিত্যিকরা যুগে যুগে পিতার এমন রূপের কথা লিখেছেন; গেয়েছেন বিজয়ের গান। ‘যখন আর কিছু থাকে না তখন সময় কাটে না/ বন্ধুর টেলিফোনে পাত্তা দেই না/ জানালার গ্রিলের ওপর মাথা রাখি/ ভাবি কেউ বলে না বাবার মতো/ আয় খুকু আয়, আয় খুকু আয়। ‘ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং শ্রাবন্তী মজুমদারের গাওয়া এই গানটি শিশুদের সীমাহীন নস্টালজিয়ায় নিমজ্জিত করে। শাস্ত্রে (পিতার প্রণাম মন্ত্র) বলা আছে- ‘পিতা স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতা পরমং তপ/পিতোরি প্রীতিমাপনে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা’; অর্থাৎ, ‘পিতা স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতা পরম তপস্যা। পিতার পূজা করলে সকল দেবতাই সন্তুষ্ট হন। ‘
সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা চিরন্তন। বাবা দিবস শিশুদের জন্য তাদের বাবার প্রতি তাদের ভালবাসা প্রকাশ করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলির মধ্যে একটি। আজ সেই দিন। প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্ব বাবা দিবস পালিত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে এ ধারণা প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
প্রথম বাবা দিবসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ১৯০৮ সালে ৫ জুলাই দিবসটি ফেয়ারমন্ট, পশ্চিম ভার্জিনিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিত হয়।