পিতা ভরণপোষণের জন্য অর্থ প্রদান করেন না, মা সন্তানদের রাস্তায় রেখে চলে গেছে
ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ১৬ মাসের দুটি যমজ শিমুকে ফেলে রেখে মা সুমাইয়া আক্তার উধাও হয়ে গেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাদের বাবা, পুলিশ কনস্টেবল ইমরান হোসেন শিশুদের ভরণপোষণের খরচ দিচ্ছেন না।
প্রত্যক্ষদর্শী মাহফুজ মিয়া, যার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে চায়ের দোকান রয়েছে, তিনি বলেন, সুমাইয়া আক্তার তার দুই সন্তান আরাফ ও আয়ানকে রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ সুপার অফিসের সামনে রেখে যায়।
যাওয়ার সময় বাচ্চার মা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন,তোমাদের সন্তান তোমাদের কাছেই থাক।
রবিবার সন্ধ্যায় ঝালকাটি সদর থানা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, দুই শিশুর কান্নার কারণে থানার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে একজন নারী কনস্টেবল দুই শিশুকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ওই সময় দুই শিশুর শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই সন্তানের বাবা ইমরান হোসেন কাঁথালিয়া থানায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তিনি বর্তমানে এক মাসের প্রশিক্ষণের জন্য জামালপুরে অবস্থান করছেন। তার বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মালুহার গ্রামে।
মে ২০১৯ এ, কনস্টেবল ইমরান দুই সন্তানের জননী খোকশির গ্রামের সুমাইয়া আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বৈবাহিক কলহের কারণে চলতি বছরের মার্চ মাসে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বিবাহ বিচ্ছেদের সময়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে পুলিশ কনস্টেবল ইমরান দুই সন্তানের ভরণপোষণের জন্য মাসে তিন হাজার টাকা দেবে।
দুই সন্তানের জননী সুমাইয়ার দাবি, বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে ইমরান তার সন্তানদের কোনো সহযোগিতা করেননি।
যোগাযোগ করা হলে সুমাইয়া আক্তার বলেন, “শিশু আরাফ এবং আয়ান ১২ সেপ্টেম্বর থেকে টাইফয়েড জ্বরে ঝালকাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি। রোববার সকালে ডাক্তাররা দুই শিশুকে বিভিন্ন পরীক্ষা করতে বলেন। এর জন্য প্রায় ৬,০০০ হাজার টাকা প্রয়োজন। ব্যাপারটি কনস্টেবল ইমরানকে বলা হয়, কিন্তু তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বিচ্ছেদের পর একবারও তিনি তার সন্তানদের খোঁজ নেননি। তাই আমি বাধ্য হয়ে দুই সন্তানদের রেখে চলে আসি।
কনস্টেবল ইমরান বলেন, “দুই সন্তানের ভরণপোষণের জন্য আমি প্রতি মাসে সুমাইয়া ব্যাংকে তিন হাজার টাকা পাঠাচ্ছি।” কিন্তু কীভাবে তিনি মা হয়ে তার সন্তানদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে রেখে গেলেন। ‘
ঝালকাটি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, “আমরা পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। শিশুটির দাদা -দাদিকে জানানো হয়েছে। তারা আসলে দুটি শিশুকে তুলে দেবে।