দ্রব্যমূল্যের তালিকা নিয়ে বিশৃঙ্খলা
খুচরা দোকানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা নিয়ে বাজারে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। নিয়ম থাকলেও বেশিরভাগ দোকানেই পণ্যের তালিকা নেই। কিছু দোকানে তালিকা আছে কিন্তু কোন আপডেট দাম. কেউ কেউ লিখিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নিচ্ছেন। আবার তালিকার চেয়ে দাম কম রাখার উদাহরণও রয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, কাঁঠালবাগানসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চমকপ্রদ অবস্থা জানা গেছে।
রাজধানীসহ দেশের সব মার্কেটের প্রবেশপথ ও প্রতিটি খুচরা দোকানের সামনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা টানা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। ক্রেতারা যাতে এক নজরে পণ্যের দাম সম্পর্কে সহজে ধারণা পেতে পারেন সেজন্য এই নিয়ম করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
কয়েক মাস ধরে বাজারে নিত্যপণ্যের দামের উত্তাপ অনুভব করছেন মানুষ। রমজান উপলক্ষে দাম আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। ১৭ সদস্যের টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
গত রোববার বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই তদারকি করেন কারওয়ান বাজারে পণ্যের দাম। সেখানে তিনি ব্যবসায়ীদের বলেন, প্রতিটি দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা থাকতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও অধিকাংশ ব্যবসায়ী নির্দেশনা মানছেন না। তারা ক্রেতাদের কাছে যথেচ্ছ দামে পণ্য বিক্রি করছে।
গৃহবধূ সায়রা বেগম বরাবরই কাঁঠাল বাজারে আসেন। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, “সরকার নির্দেশনা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে। সিটি করপোরেশনের পণ্যের তালিকা এখন আর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে যে তালিকা টাঙিয়ে রাখেন তাও নামকাওয়াস্তে। -মাংস থেকে শুরু করে মুদি দোকানে সব জায়গায় একই অনিয়ম চলছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, “প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। মূল্য তালিকা ও পরিপক্ক রশিদ না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষি অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের দৃশ্যমান তদারকি নেই।
২০১৪ সালে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাজস্ব খাতে একটি পণ্য মূল্য পর্যালোচনা এবং পূর্বাভাস সেল গঠন করা হয়েছিল যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাশ্রয়ী হয়। এই সেলটি উৎপাদন, চাহিদা, আমদানির পরিমাণ, সঞ্চয় ও সংগ্রহ পরিস্থিতি এবং প্রয়োজনীয় পণ্যের বিতরণ ব্যবস্থা এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ সহ বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে।