ইফতার।হাঁকডাকে জেগে ওঠল পুরান ঢাকা

0

পুরান ঢাকার চকবাজার। সার্কুলার রোডের শাহী মসজিদের সামনে যেতেই একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম, করোনা মহামারির পর থেকে দুই বছর ধরে রমজানে ইফতারের দোকানের গর্জন শোনা যাচ্ছে না। নিভে যাওয়া প্রাণ আবার জেগে উঠল চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারে। রোববার দুপুর থেকেই এলাকার রেস্টুরেন্ট ও হোটেলগুলো রাস্তাঘাটে টেবিল পেতে ইফতারের স্টল সাজিয়েছে।

 মুরগি, কবুতর, হাঁস রোস্ট। তবে প্রথম রমজানে খুব বেশি দোকানপাট না থাকলেও ক্রেতাদের পদচারণায় চকবাজার হয়ে ওঠে নতুন ও প্রাণবন্ত। তবে পুলিশ এসে রাস্তায় দোকান বসাতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেক দোকানদার।

প্রথম দিনে পুরান ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে ইফতার কিনেছেন। সংখ্যায় কম হলেও সার্কুলার রোডের দখলে ছিল বাহারি ইফতারি দোকান। চিকেন রোস্ট, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, ঢালফ্রাই, চিকেন কালাভুনা, গ্রিল, কলিজা, সাসলিক, চিকেন জালি কাবাব, চিকেন সুতি কাবাব, চিকেন পিজ্জা, চিকেন ফ্রাই, চিকেন কোপ্তা, বিফ কোপ্তা, টিকা, চিকেন ফ্রাই, বুরদা, ফালু। , ফিরনি, মাঠা, পেস্তার শরবত, পরোটা, নানরুটি, দুধ নানরুটি, ঝাল নানরুটি, গরুর নানরুটি, মুরগির নানরুটি, মোগলাই রুটি, সমুচা, শিঙ্গাড়া, জিলাপি, বেগুনী, ছোলাবাট, আলু, বেগুনের দোকান।

আজিমপুর থেকে আসা রকি আহমেদ বলেন, ‘রমজানে ইফতার মানেই চকবাজারের ইফতার। করোনার কারণে দুই বছর আসতে পারিনি। এই বছরের প্রথম দিনেই চলে এসেছি।

ফার্মগেট থেকে ইফতার করতে আসা খালিদ বলেন, ‘পরিবারে একসঙ্গে ইফতার করব। আগেই অফিস থেকে বের হয়েছি। খাসি ও মুরগির ঝাল ফ্রাই, বড় বাপের পোলাও, ছোলা, দইবড়াসহ অনেক কিছু নিয়েছি।

চকবাজারের ইফতারের মধ্যে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামক খাবারটি আদি ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। আগে কয়েকটি দোকানে বিক্রি হলেও এ বছর তা শুধু মোহাম্মদ জুয়েলের কাছেই পাওয়া যাচ্ছে। জুয়েলের দাদা পুরান ঢাকায় ‘বড় বাপের পোলায় খা’ নামে ভারতীয় এই খাবারটি চালু করা শুরু করেন। মোহাম্মদ জুয়েলের দাবি, তিনি ৩৫ বছর ধরে ইফতারি বিক্রি করছেন। জানতে চাইলে জুয়েল বলেন, ‘খাসির কাবাব, খাসির রানের মাংস, খাসির মগজ, খাসির লিজা, মুরগির মাংস, হাসের মাংস, ডিম, আলু ভেজিটেবল ও ঘিসহ ১২টি মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় ‘বড় বাপ পোলায়া খা’। করোনা মহামারীর আগে দাম ছিল ৪৫০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। তার দোকানে গরুর মাংসের কটন কাবাব বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায় এবং খাসির সুতি কাবাব বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *