শাহজাহানপুরে টিপু হত্যাকান্ড।হত্যার নেপথ্যে কারা,শুটার গ্রেপ্তার
মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পুলিশ জানায়, রাজধানীর গোরানের বাসিন্দা মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
রোববার সকালে বগুড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম টিপুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ ছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ভাড়াটিয়া খুনি গ্রেফতার হলেও গতকাল পর্যন্ত তাকে কারা ভাড়া করেছে তা জানায়নি পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়নি।
এমনকি টিপুকে কী কারণে টার্গেট করা হয়েছে তাও জানা যায়নি। এছাড়া মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীরা বলছেন, মাসুমকে অস্ত্র ও মোটরসাইকেল সরবরাহকারী ব্যক্তির নামও তারা পেয়েছেন। এমনকি হত্যাকাণ্ডে মোটরসাইকেলে তার সঙ্গী হওয়া ব্যক্তিকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তা প্রকাশ করতে রাজি হচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
টিপুর স্ত্রী নারী কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বলেন, পুলিশ তাকে শুটার দেখিয়েছে। আমি তাকে চিনি না। কখনও দেখিনি আমি জানি না আমার স্বামী জানত কিনা। তিনি একজন ভাড়াটিয়া। তারপর জানতে চাই কে মূল পরিকল্পনাকারী। টিপুর রাজনৈতিক অবস্থানে ব্যাপকভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। আমার ও আমার সন্তানদের আত্মার শান্তির জন্য আমি দ্রুত মূল নেতাদের মুখ দেখতে চাই।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মাসুমের মানসিকতা খুবই শক্ত। ধাপে ধাপে আমরা পরিকল্পনাকারীর কাছে যাব।
গতকাল দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো:
কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, হত্যার পাঁচ দিন আগে মাসুমকে ভাড়া করা হয়। ঘটনার তিন দিন আগে কমলাপুরের ইনল্যান্ড ডিপো এলাকায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি এসে একটি মোটরসাইকেল ও অস্ত্রসহ মাসুম ও তার সহযোগীকে নিয়ে যায়। ঘটনার আগের দিন টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মাসুম ও তার সহযোগীরা এজিবি কলোনিতে গিয়েছিল। তবে ওই দিন তাকে না পেয়ে তারা ফিরে আসেন।
হাফিজ আক্তার বলেন, মাসুম শুধু আর্থিক লাভের জন্য হত্যাকাণ্ডে অংশ নেননি। শুটার মাসুম একটি প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। মাসুমের স্ত্রী ও তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। মাসুম একটি হত্যা মামলাসহ চার-পাঁচটি মামলার পলাতক আসামি। এসব মামলা থেকে বাঁচানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে হত্যায় প্ররোচিত করা হতে পারে। তবে কে তাকে নিয়োগ দিয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি ডিবি।
এটা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কিনা জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, আমরা তিন-চারটি সম্ভাবনা মাথায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চিত না হয়ে মিডিয়ার সামনে এ নিয়ে কথা বলব না। মাসুমের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।