হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেন সরকারের কাছে হস্তান্তর
ইউক্রেনে বেঙ্গল প্রসপ্রিটি জাহাজে হামলায় নিহত জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশটির সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের এক সহকর্মী শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে তার জানাজা সম্পন্ন হয়।
হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নে। পরিবারের পক্ষ থেকে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তার সঙ্গী ২৮ জন নাবিকও তার মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছিলেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ থেকে টাগবোটে ওঠার সময় হাদিসুরের লাশও সঙ্গে নিয়ে যায় তারা। তার লাশও বাঙ্কারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউক্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া সব নাবিককে মলদোভায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে। সেখান থেকে তাদের আবার রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, নাবিকদের রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইউক্রেনে বেঁচে থাকা নাবিকরা কেমন আছেন? এ প্রশ্নের জবাবে জাহাজের প্রধান প্রকৌশলী ওমর ফারুক তুহিনের মা খায়রুন নেশা বলেন, “এ অনুভূতি এখনো শোনার সুযোগ পাইনি। আগে ছেলের সাথে প্রতিদিন ফোনে কথা বলতাম। কিন্তু এখন আমার ছেলে শুধু আমার অন্য ছেলে ও ভাইকে ভয়েস মেসেজ পাঠাচ্ছে। তিনি বললেন, তোমার মাকে বল আমার জন্য দোয়া করতে।
ওমরের ছোট ভাই ওমর শরীফ তুষার বলেন, “শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে আমি মেসেজ পাঠিয়েছিলাম। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বাঙ্কারে আছি, আমি সুস্থ আছি’। তখন বাকি নাবিকরা বেশির ভাগই ঘুমিয়ে ছিলেন। তারপর ভোররাতে সবাই। কবে নাগাদ যাবেন তা তিনি বলতে পারেননি।জাহাজের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী মাসুদুর রহমানের ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, নামার পর তারা বাঙ্কারে ছিলেন এবং নিরাপদে ছিলেন।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে ইউক্রেনের আলভিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন নাবিক নিয়ে জাহাজটি আটকে যায়। গত বুধবার সন্ধ্যায় রকেট হামলায় জাহাজের সেতুটি ধ্বংস হয়ে যায়। হাদিসুর মারা যান। বৃহস্পতিবার জাহাজটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং নাবিক ও প্রকৌশলীদের বাঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া হাদিসুরের মরদেহ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে পোল্যান্ডের ওয়ারশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। সরকার তাকে দেশে আনার পরিকল্পনা করেছিল। তবে যুদ্ধের কারণে তা বাতিল হয়ে থাকতে পারে।