আমলা –আইনবিদ বেশি তালিকায় অখ্যাতরাও
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)সহ চার কমিশনারকে রাষ্ট্রপতির সার্চ কমিটি মনোনীত করেছে। নিবন্ধিত ৩৯টির মধ্যে ২১টি রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি তাদের নাম দিয়েছেন। সোমবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ তালিকা প্রকাশ করে। তবে কার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তা জানাযায়নি ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩২২ জনের নাম এসেছে। তবে প্রকাশিত তালিকায় দুবার অন্তত সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় ৩১৫ জনের নাম রয়েছে। তাদের অধিকাংশই সাবেক আমলা, ৮৯ জন। এরপর আইন পেশার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা রয়েছেন। দুই সাবেক প্রধান বিচারপতিসহ ১৫ জন বিচারপতির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ২৩ জন বিচারপতির নাম রয়েছে। এছাড়া ২৬ জন আইনজীবীর নামও প্রস্তাব করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তিন সাবেক মহাপরিদর্শকসহ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে বেশ কিছু অচেনা-অচেনা মানুষের নামও।
সার্চ কমিটির সদস্য সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেনও রয়েছেন তালিকায়। সাবেক দুই কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন ও মোহাম্মদ আবদুল মোবারকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় জেসমিন টুলি ও খন্দকার মিজানুর রহমানসহ নির্বাচন কমিশনের সাবেক পাঁচ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। নির্বাচন কমিশনারের পদ পেতে যুগ্ম সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করা আবুল কাশেমের নামও রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর স্ত্রী সাবেক অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের। জাপা তার নাম প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে।
তালিকায় বেশিরভাগ নামই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির। তবে মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু, কবি ফিরোজা আক্তার, ফ্রিল্যান্স কনসালট্যান্ট জ্যোতি বিকাশ বড়ুয়া, প্রবাসী মজিবুর রহমান মজিব, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বরগুনা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালিব মিয়া, ‘পর্যটন স্কলার’ মোঃ রফিউজ্জামান, মো. এডিটিং কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ রফিউজ্জামানসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেছেন, সার্চ কমিটি সবার পরামর্শে নাম ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বিতর্ক সৃষ্টির সুযোগ থাকবে না।
তবে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বিএনপি কখনোই সার্চ কমিটি করতে আগ্রহী ছিল না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিএনপির প্রধান দাবি। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বর্জনকারী আরেক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নামের তালিকা নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তাই এতে নতুন কিছু নেই।
ক্ষমতাসীন জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অবশ্য বলেছেন, নামের তালিকা প্রকাশ করা তাদের দাবি নয়। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে যে ১০ জনের তালিকা পাঠাবে তা প্রকাশ করতে হবে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি জে আর মোদাছির হোসেন, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বর্তমান প্রধান বিচারপতি।
বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথসহ ১৫ জন রয়েছেন তালিকায়।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ শফিউল আলমের নাম প্রস্তাবে রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, নজিবুর রাজমান ও মোহাম্মদ আবদুল করিমের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
তালিকায় রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুনুর রশীদ, জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, শহীদুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ খন্দকার।
প্রস্তাবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী ও গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরীর নাম রয়েছে। এরশাদ সরকারের প্রতিমন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আল আজাদও উপস্থিত রয়েছেন।
পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, মোস্তফা কামাল উদ্দিন, অশোক মাধব রায়, আবুল মালেক, জিল্লার রহমান, কাজী হাবিবুল আউয়াল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী আকতারী মমতাজ ও সাবেক সচিব কামরুন নাহার।
তালিকায় পাঁচ সাংবাদিকের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত।
অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, ড. বিনায়ক সেন, ড. আহসান এইচ মনসুর, সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনের নাম আছে।
তালিকায় রয়েছে আইনজীবীর নাম। সেখানে শাহদীন মালিকের নাম রয়েছে।
