রত্ন চুরি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সৌদি-থাইল্যান্ডের বিরোধের অবসান
যুবরাজের প্রাসাদ থেকে মূল্যবান রত্ন চুরি এবং পরবর্তী কূটনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি আরব এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে ৩০বছরের পুরনো দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার থাই প্রধানমন্ত্রী প্রয়ুথ চ্যান-ওচারের সৌদি আরব সফরের সময় দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
এর ফলে থাই শ্রমিকরা সৌদি আরবে কাজে ফিরতে পারবেন। প্রতি বছর বিশ্বের লাখ লাখ শ্রমিক কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে যান।
তাছাড়া পর্যটন ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
১৯৮৯ সালে সৌদি যুবরাজের প্রাসাদ থেকে দামি রত্ন ও গয়না চুরি করার পর থাই নাগরিক ক্রিয়ানক্রাই টেকামাং পালিয়ে যায়। ক্রিয়াঙ্করাই প্রসাদের ক্লিনার ছিলেন। চুরি হওয়া রত্নগুলির মধ্যে ৫০ক্যারেট ওজনের একটি বিরল নীল হীরা ছিল। যা আজ পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি।
ডাকাতির এক বছর পর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে তিন সৌদি কূটনীতিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। তদন্ত করতে যাওয়া সৌদি কর্মকর্তা নিখোঁজ হয়েছেন। থাইল্যান্ডের বেশ কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা অপরাধের সাথে জড়িত থাকলেও তাদের কখনোই দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।
ক্রিয়ানক্রাই, একজন থাই ক্লিনার, সৌদি আরবের তৎকালীন রাজা ফাহাদের বড় ছেলে প্রিন্স ফাসাইলের বাড়িতে কাজ করতেন। সেখান থেকে রত্ন চুরি করে ক্রিয়াঙ্করাই থাইল্যান্ডে পালিয়ে যায়। চুরি যাওয়া রত্ন-মণির আসল মূল্য ক্রিয়াঙ্কারদের জানা ছিল না।
এছাড়াও, চুরি যাওয়া গয়না তদন্ত করতে থাইল্যান্ডে যাওয়া সৌদি কর্মকর্তা নিখোঁজ হয়েছেন। চুরির কথা জানতেন এমন দুই থাই নাগরিকও রহস্যজনকভাবে মারা যান। এই সব মামলায় ক্রিয়াঙ্করাই এবং একজন পুলিশ অফিসার ছাড়া আর কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।
সৌদি আরব থাই পুলিশ ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। পরিবর্তে, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা চুরি করা গয়না বাজেয়াপ্ত করে এবং সৌদি কূটনীতিকদের হত্যার বিষয়ে “নিরব” ছিলেন।
চুরি কেলেঙ্কারির পর এটিই প্রথম কোনো থাই সরকারি কর্মকর্তার সৌদি আরবে সফর। একটি যৌথ বিবৃতিতে, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ বলেছেন যে তিনি ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ সালে থাইল্যান্ডে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার জন্য “গভীরভাবে দুঃখিত”।