মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কে এম শফিউল্লাহ আর নেই

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার সকালে তিনি মারা যান।

দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ সফিউল্লাহ ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, থাইরয়েডের জটিলতা, ফ্যাটি লিভার, ডিমেনশিয়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।
১৯৭১ সালে, শফিউল্লাহ জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান ছিলেন। তার নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে, শফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নং সেক্টরের কমান্ডার। পরে, যখন তিনটি নিয়মিত সেনা ব্রিগেড (বাহিনী নামে পরিচিত) গঠিত হয়, তখন শফিউল্লাহ ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী কে এম শফিউল্লাহ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
১৯৯১ সালে দেশে ফিরে এক বছরের জন্য তাকে ওএসডি করা হয়। পরের বছর তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জ ১ আসন থেকে নৌকা মার্কায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকে বেগবান করতে মুক্তিযুদ্ধের জীবিত সেক্টর কমান্ডারদের নিয়ে ২০০৭ সালে যখন সেক্টর কমান্ডার ফোরাম গঠিত হয়, তখন শফিউল্লাহ সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। পরে তিনি এই সংগঠনের চেয়ারম্যানও হন।
১৯৭৫ সালে যখন একদল সেনা সদস্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করে, তখন সেনাপ্রধান ছিলেন শফিউল্লাহ।