৩৫ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা

0

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি পাওয়ার প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙে জাবি শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় এক সংবাদ সম্মেলনে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব।

Description of image

এর আগে বিকেল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে তারা সচিবালয়ের সামনে পৌঁছান। এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইন স্ট্যান্ডসহ রিকশা করে পদযাত্রায় অংশ নেন। অনশনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে একেএম রাকিব বলেন, ‘আগামী বুধবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি স্বাক্ষরের লিখিত প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। এ ছাড়া বাণী ভবন ও ডাঃ হাবিবুর রহমান হলটিতে একটি অস্থায়ী স্টিলভিত্তিক ভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ভাতা দেওয়ার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু তারা (সরকার) তিনটি দাবির মধ্যে দুটি মেনে নিয়েছে এবং একটি যাচাই করবে, তাই আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করছি। তবে বুধবারের সভা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা ‘বিপ্লব বলিয়ান, নির্বিক জাবিয়ান’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘শেম শেম, ইউজিসি ইউজিসি’, ‘আসন সংগ্রাম’ স্লোগান দেয়। ‘চলো চলো’, ‘কবে দিবা ক্যাম্পাস’, ‘প্রশাসন কী করবে, আমার ভাই অনশনে’।

ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে দুপুর ২টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর কাছে কাজ হস্তান্তরের বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক হবে। চিঠি পাওয়ার পর অনশনরত শিক্ষার্থীরা তিনটি পাল্টা দাবি জানায়।

দাবিগুলো হলো, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চুক্তি অবিলম্বে সই করা হোক। প্রয়োজনে বিশেষ সভার মাধ্যমে তা সম্পন্ন করে সবার সামনে দৃশ্যমানভাবে উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি নিতে হবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস নেওয়ার নামে কোনো ধরনের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ডঃ হাবিবুর রহমান হলের ইস্পাতভিত্তিক ভবনের কাজ দ্রুত শুরু করে শেষ করতে হবে; আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সাবিনা শারমিন বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এবং আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আমি আশা করি দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত হবে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে আমাদের কার্যক্রম সহজ ও দ্রুততর হয়েছে। আমাদের কাজ অনেক এগিয়েছে। প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। তারপর বৈঠকে আমরা বিবিধ খাতের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

উল্লেখ্য, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা। অনশন চলাকালীন প্রায় ১৪ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *