নতুন কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন চিকিৎসকরা
ভাতা বাড়ানোর দাবিতে রাজধানীর ব্যস্ততম শাহবাগ মোড়ে ১১ ঘণ্টা অবরোধের পর অবশেষে অবরোধ তুলে নেন বেসরকারি স্নাতকোত্তর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। রাত ১০টার দিকে তারা নতুন কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগ ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। এর আগে সকাল ১১টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা।
এদিকে নতুন বছরের জানুয়ারি থেকে ৩৫ হাজার টাকা এবং জুলাই থেকে ৫০ হাজার টাকা ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
রোববার রাত সাড়ে ১০টায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস সোসাইটির সভাপতি ডা. জাবির হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
জাবির হোসেন বলেন, “আমরা আজকের মতো আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে আমরা সোমবার সকাল ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসায় গিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের কাছে আমাদের দাবি জানাবো। এটি আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি আমাদের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা খুবই বিজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি অবশ্যই আমাদের সমস্যা বুঝবেন। আমাদের এখন একটাই আশা, তিনি যদি আমাদের সমস্যা বুঝতে পারেন, আশা করি ভালো কিছু হবে।’
ওই দিনই রাত সাড়ে নয়টার দিকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। এ সময় তিনি শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের আগামী জুলাই থেকে ভাতা ৩৫ হাজার টাকায় উন্নীত করার আশ্বাস দেন। এমনকি দেশের সংকটময় সময়ে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। তবে চিকিৎসকরা তার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে ২৫ ডিসেম্বর জারি করা ৩০ হাজার টাকা ভাতার প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে রোববার শাহবাগ মোড় চারদিকে অবরোধ করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। নবম শ্রেণির জন্য প্রত্যাশিত ৩৫ হাজার টাকা ভাতার সিদ্ধান্ত হলেও সন্তুষ্ট নন তারা। ঢাকার ব্যস্ততম মোড় শাহবাগে দিনভর অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চিকিৎসকরা। তীব্র যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
সাধারণ মানুষের করুণ অবস্থার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের দাবি আদায়ের অন্য কোনো উপায় নেই।
তারা বলেন, “আগের সরকার চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ হাজার টাকা কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিলেও ডিসেম্বরে তা বাস্তবায়ন করা হয়। নতুন করে ৩৫ হাজার টাকা বাড়ানো হলেও আগামী জুলাই থেকে তা কার্যকর করার কথা বলা হচ্ছে। আমরা এই ভাতা চাই। জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন হবে কারো আশ্বাসে তারা আন্দোলন ছাড়বে না।
পরে আন্দোলনরত চিকিৎসক ও রাজনৈতিক দলের চিকিৎসা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।
জাতীয় নাগরিক কমিটির ডাঃ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কোষাধ্যক্ষ ডাঃ হুমায়ুন কবির হিমু, জাতীয় চিকিৎসক ফোরামের (এনডিএফ) সহ-সভাপতি ডাঃ শাকিল। জামায়াতপন্থী চিকিৎসকদের মধ্যে, অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান, আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সভাপতি, ডা. জাবির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ড. নুরুন নবী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, বৈঠকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং জুলাই থেকে ৩৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে সরকার। বৈঠকে উপস্থিত সব পক্ষই এতে একমত হয়েছেন। সেই প্রস্তাব নিয়ে প্রতিনিধিরা শাহবাগে এলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।