আওয়ামী লীগ আমলের সচিবরা বিদায়ের পথে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত চার মাস ধরে প্রশাসন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সাবেক সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তার কারণে এখানেও প্রশাসনে কাঙ্খিত গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। রদবদলের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রশাসনের শীর্ষ পদে (সচিব) রদবদল করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চুক্তিভিত্তিক সচিবও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে, সদ্য শূন্য হওয়া জননিরাপত্তা বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগসহ সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে শূন্যপদ রয়েছে। আগামী কুড়ি দিনের মধ্যে পদত্যাগ করবেন প্রশাসনের আরও পাঁচ সচিব। এখন আওয়ামী লীগ সরকারে যারা আছেন তাদের বিদায়ের কাউন্টডাউন চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবের মেয়াদকাল হচ্ছে ডঃ মোঃ আনোয়ার উল্লাহ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. একেএম শামীম উল্লাহ। হক সিদ্দিকী, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ মো.
জানা গেছে, বর্তমান সরকারের আমলে ৮০ জন সচিব প্রশাসনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। এই ৮০ জনের মধ্যে ৩৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ আমলে। বাকি ৪৪ জনের মধ্যে ১৩ জনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার শূন্য পদে নতুন সচিব নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান আমের সুমিকে বলেন, প্রশাসনে সচিব পদে পদোন্নতি ও পদায়ন চলছে। এবার আমরা ব্যবহারিক হব। জনগণের কাছে যতটুকু গ্রহণযোগ্য ততটুকু দেওয়ার চেষ্টা করব।
তবে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যারা রাজনৈতিক সরকারের মতো পদোন্নতি চান তারা প্রশাসনের শীর্ষ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন। তাদের যুক্তি, সচিব পদে পদোন্নতি পেলে প্রশাসন আরও বেগ পেতে হবে। প্রশাসনে অনেক কর্মকর্তা ছাড়াও এমন অনেকেই আছেন যারা বিগত সরকারের মেরুদণ্ডী ছিলেন। তাদের দিয়ে শূন্যপদ পূরণ করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা।
এদিকে প্রশাসনে আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগকৃত শীর্ষ কর্মকর্তাদের অব্যাহত অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সংগঠনের নেতারা প্রশ্ন করেন, আওয়ামী শাসনামলের সুবিধাভোগীরা এখনো প্রশাসনে কেমন আছেন? তাদের দাবি, গত ১৬ বছর ধরে তারা বঞ্চিত। কয়েকজনকে পদোন্নতি দেওয়া হলেও ডাম্পিং পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। তারা যত দ্রুত সম্ভব বৈষম্য দূর করার জোর দাবি জানান।
আওয়ামী শাসনামলে যারা এখনো পদে আছেন তারা হলেন- শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মোঃ মোকাব্বির হোসেন, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের কাজী এনামুল হাসান, পরিকল্পনা কমিশনের আরেক সদস্য ড. মোহাম্মদ কাউসার আহমেদ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মোঃ মোঃ মাহবুব হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডঃ ফারহিনা আহমেদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ডাঃ মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, ড. ড. নাসরীন আফরোজ, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ফরিদ আহমেদ, ডা. মুশফিকুর রহমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নাজমুল আহসান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মোঃ আশরাফ উদ্দিন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব একেএম শামীমুল হক সিদ্দিকী, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. প্রতিরক্ষা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক অর্থ বিভাগের মো. খায়রুজ্জামান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মো: মাহমুদুল হোসেন খান, জাতীয় পরিকল্পনা একাডেমির মহাপরিচালক সুকেশ কুমার সরকার, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস একাডেমির রেক্টর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নাজমা মোবারেক, ইসরাত চৌধুরী প্রমুখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্পর্ক বিভাগ, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ড. মোঃ শহীদ উল্লাহ, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহানা পারভীন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন, ড. বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মোঃ সেলিম উদ্দিন, দুর্নীতি দমন কমিশন খোরশেদা ইয়াসমিন, পরিকল্পনা