মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ডেসটিনির ক্রাউন রেজার, প্রতারণা থেমে নেই
ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের সাবেক ক্রাউন এক্সিকিউটিভ এবং ডেসটিনি মাল্টি-পারপাস কো-অপারেটিভের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এএইচএম আতাউর রহমান রেজা ওরফে ক্রাউন রেজার তার প্রতারণা বন্ধ করেনি। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রতারণার জাল বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ডেসটিনি মানি লন্ডারিং মামলায় আতাউর রহমান রেজাকে ৮ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ধরিত্রী গার্ডেন সিটি ও ক্রাউন টাচ গ্লোবাল নামে দুটি পৃথক আবাসন প্রকল্পের ব্যানারে প্রতারণার নতুন ফাঁদ পেয়েছেন তিনি। তিনি শ্রীনগর উপজেলার হাশারা এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশে ওই দুটি আবাসন প্রকল্প খুলে কিস্তিতে প্লট বিক্রি করে প্রতারণা করে আসছেন। স্বল্প পরিমাণ জমি কিনেও এ দুটি আবাসন প্রকল্পে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিজ্ঞাপন দিতে বড় বড় এলাকায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে জনগণকে। একই প্লট বিক্রি হচ্ছে অসংখ্য মানুষের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখি রাস্তার পাশে বিশাল সাইনবোর্ড। এতে বলা হয়েছে- ‘আমাদের কোনো সাইনবোর্ডের ভাড়া প্রমাণ করতে পারলে এক কোটি টাকা পুরস্কার থাকবে।’ প্লটের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এই আবাসন প্রকল্পের সামনে অল্প পরিমাণ জমি ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু হাজার শতাংশের বেশি জমিতে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। দেখা গেছে, কেউ কেউ ওই সব জমি চাষের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন।
আবাসন প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় অপু মিয়া বলেন, যেসব জমিতে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে সবই কোম্পানির। অফিস খোলার দায়িত্ব আমার। ঢাকা থেকে আমাদের হেড অফিসের লোকজন ক্রেতা নিয়ে আসে। এখানে কাঠা অনুযায়ী বিক্রি হয়। এখন পর্যন্ত কারো কাছে জমি হস্তান্তর করা হয়নি। আমাদের ভরাটের কাজ চলছে। তুমি ঢাকা অফিসের সৌরভ স্যারের সাথে কথা বল। কোন খরচ থাকলে স্যার ম্যানেজ করবেন। স্যারের সাথে কথা বলুন।
ঢাকা থেকে আসা মার্কেটিং ম্যানেজার শিহাব আহমেদ বলেন, আমরা মার্কেটিং এর কাজ করি। আমাদের কাজ হচ্ছে ক্রেতারা এলে তাদের প্রকল্প এলাকা দেখানো। কিভাবে এবং কি করতে হবে, দেখুন কি ব্যবস্থাপনা। আপনার কিছু বলার থাকলে তাদের সাথে কথা বলুন।
ক্রাউন রেজার বিরুদ্ধে একাধিক জালিয়াতির মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। ৮ বছরের সাজা থাকার পরও রেজা তার নাগালের বাইরে থেকে বিভিন্ন প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর, র্যাব ও সিআইডিতে একাধিক অভিযোগ করেছে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা।
সিআইডিতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, আতাউর রহমান রেজা বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে কিস্তিতে প্লট বিক্রি, সেমিনার আয়োজন ও বিভিন্নভাবে অনলাইনে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন। সে টাকা আবার মালয়েশিয়ায় পাচার করছে।
তিনি কুয়ালালামপুরের বিনতাংয়ে জিটিসিএল নামে একটি কোম্পানিও চালাচ্ছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও আতাউর রহমান রেজা কোনো বাধা ছাড়াই নিয়মিত মালয়েশিয়া যাতায়াত করছেন।