ভারতের পর্যটন ও চিকিৎসা ব্যবসায় বড় ধরনের ধস
বিপুল ছাড়ের পরও হোটেলগুলো বোর্ডার পাচ্ছে না। কলকাতার নিউ মার্কেট মানি এক্সচেঞ্জ গ্রাহক শূন্য। চিকিৎসা-পর্যটন আয় ২বিলিয়ন কমে যাবে। ভারতীয় রুপির মূল্য সর্বকালের তলানিতে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ভারতের পর্যটন ও চিকিৎসা ব্যবসায় বড় ধরনের ধস নেমেছে। পর্যটন ও চিকিৎসার মাধ্যমে ভারতের ডলার আয়ের অন্যতম উৎস বাংলাদেশ। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস দিন দিন বাড়ছে। আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও পতাকা পোড়ানোর সর্বশেষ ঘটনা এবং কিছু ভারতীয় নেতার বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে।
বিশাল ছাড় সত্ত্বেও, কলকাতার হোটেলগুলি বোর্ডার পাচ্ছে না। কলকাতার নিউমার্কেটকে কেন্দ্র করে দোকানগুলোও বাংলাদেশি গ্রাহকদের শূন্য। একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। আবার ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে হাসপাতালগুলো বাংলাদেশি রোগী পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বুধবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির মূল্য সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে রুপি ৮৪-৭৫-এ নেমে এসেছে।
বাংলাদেশের এওট্রেক ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুরুল আলম নয়ন গতকাল বলেন, কয়েক মাসে দেশের মোট পর্যটনের অর্ধেক কমে গেছে। যেখানে ভারতে প্রতিদিন গড়ে সাতটি ফ্লাইট চলত, সেখানে এখন সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট রয়েছে। ভারতে যারা চিকিৎসা ও দর্শনীয় স্থান দেখতে যান তাদের একটি অংশ এখন থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন। তবে সেই সংখ্যা ৩০ শতাংশও হবে না।
অভ্যন্তরীণ পর্যটন প্রসঙ্গে মঞ্জুরুল আলম বলেন, সেন্টমার্টিনসহ পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকরা সহজে যেতে পারছেন না। সম্প্রতি গোলাগুলির কারণে পাহাড়ি অঞ্চলে পর্যটকদের যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের বাইরে যেতে না পারলে দেশের মধ্যেই ভ্রমণ করতে চায় মানুষ। বাংলাদেশও সেই সুযোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
কলকাতার বিভিন্ন হোটেলের ওয়েবসাইটে দেখা যায় ডিসকাউন্টের আস্ফালন। এই পর্যটন মৌসুমে, যেখানে আপনি একটি হোটেল রুম পেতে ঘাম ঝরাবেন, হোটেলগুলি বিশাল ছাড় দিচ্ছে। গতকাল কলকাতার অভিজাত হোটেল হোটেল ও’পার্কে ৭৫ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ হোটেল ৩০-৭৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছে।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার হোটেল মালিক সমিতি এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার হোটেল মালিক সমিতি বাংলাদেশিদের ভাড়া না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালও বাংলাদেশি রোগীদের না দেখার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে কিছু ব্যবসায়ী প্রচার পেতে বাংলাদেশিদের বয়কটের ডাক দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে উত্তেজনা বাড়ছে। আসলে এসব এলাকা ও হাসপাতালে বাংলাদেশিদের আনাগোনা কম। আর কলকাতার নিউ মার্কেট বাংলাদেশি ক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল। জেনেশুনে বয়কটের ডাকে যোগ দেননি কলকাতার ব্যবসায়ীরা।