দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমছে

0

দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৫ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। যদিও সরকারিভাবে বলা হয়েছে চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। যাইহোক, কমবেশি গড় সরবরাহ বর্তমানে ২.৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মধ্যে রয়েছে। এদিকে গ্যাস সংযোগের অপেক্ষায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানেও গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। গ্যাসের লোড বৃদ্ধির অপেক্ষায় তারা বছরের পর বছর গ্যাস বিতরণ কোম্পানির অফিস থেকে অফিসে যান। ফলে গ্যাস সংকটের কারণে কার্যত সবকিছুই ধীর গতিতে চলছে। এ অবস্থায় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাসের সরবরাহ দিন দিন কমে যাচ্ছে।

দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার খুব একটা আশা নেই। গ্যাসের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে আমদানি করা এলএনজির ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু সেখানেও রয়েছে বিরাট সংকট। কারণ বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ ডলার জড়িত থাকলেও সংকট এখনো কাটেনি। সব মিলিয়ে দেশের জ্বালানি সরবরাহ শিল্প-বাণিজ্য, বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাপেক্সের আওতাধীন গ্যাস কূপগুলো থেকে দৈনিক ১১৭ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রের কূপ থেকে প্রতিদিন ৫৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়, সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের কূপ থেকে ১৩.৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অক্টোবর পর্যন্ত, সমস্ত গ্যাস ক্ষেত্র থেকে দৈনিক গড় উত্তোলন ছিল ১০৩৯ ঘনফুট। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাকি সময়ে দৈনিক গড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে বা উত্তোলন করা হবে মাত্র ৭১৭.৪৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এসব উৎস ছাড়াও দেশের অন্যান্য কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনকারী বিদেশি কোম্পানি এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার একজন পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত এক দশক ধরে গ্যাস সংকট চলছে। নানা চেষ্টা করেও গ্যাসের উৎপাদন প্রয়োজনীয় মাত্রায় বাড়ানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশীয় গ্যাসের উৎস বা সরবরাহের বাস্তবতা মাথায় রেখে এলএনজি টার্মিনাল বা এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকছিল। তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। ভবিষ্যতে আরও বড় মাঠ থাকলে সেটা অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু আমরা না পেলেও দেশের শিল্প অগ্রগতি বা অর্থনৈতিক গতি ধরে রাখতে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়ায় এ খাতের সংকট আরও প্রকট হতে চলেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তারা সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ফলে আগামী দিনে জ্বালানি, বিশেষ করে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ ঠিক রাখা বড় চ্যালেঞ্জ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *