নৈরাজ্যের ইন্ধন পলাতকদের, সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানি।

0

ক্ষমতার পরিবর্তনের পরও ঢাকায় নৈরাজ্য অব্যাহত রয়েছে। দাবি আদায়ে বিক্ষোভসহ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা ও সংগঠনের মানুষ। সময় যত গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে নৈরাজ্য। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রিকশাচালকরাও অচল করে দিচ্ছেন। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি কলেজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলার আগাম সতর্কতা সত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

Description of image

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা এবং দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় নৈরাজ্য দিন দিন বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলাকারীরা মাঠ থেকে হামলা ও নৈরাজ্যে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইন্ধন জোগাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক, সামাজিক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, দাবি থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে যে নৈরাজ্য ও দুর্ভোগ চলছে সে বিষয়ে সরকারের সতর্ক হওয়া উচিত। দাবি আদায়ে জনগণকে জিম্মি করে রাখার কৌশল দীর্ঘদিনের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের অন্য কোনো ইন্ধন বা প্রভাব আছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। এভাবে চলতে থাকলে আতঙ্ক তৈরি হবে। রাস্তায় বের হওয়ার আগে মানুষকে দুশ্চিন্তা নিয়ে বের হতে হয়। বিষয়টি তারা ভালোভাবে নিচ্ছে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়ে তৌহিদুল হক বলেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে পুলিশের নৈতিক অবস্থান ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু উপস্থাপন করা হলে সেখানেই বিচার শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাজে লাগাতে হলে পুলিশের ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।

পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে ভাঙচুরের প্রতিবাদে গতকাল ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, একদিন আগে হামলার ঘোষণা দেওয়ার পরও সরকার তা প্রতিরোধে জোরালো ব্যবস্থা নেয়নি। দুপুর থেকেই মোল্লা কলেজে ভাঙচুর দেখা যায়। তাদের ঠেকাতে পুলিশ বিশেষ ভূমিকা পালন করেনি। আন্দোলনকারীরা মাইক ব্যবহার করে ভাংচুর চালায়। আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হলে পরিস্থিতি এতটা বাড়ত না।

ডিএমআরসি কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামির জানান, গত রোববার রাতে কলেজের অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যান পুলিশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু পুলিশ আশানুরূপ সহযোগিতা করেনি। প্রশাসন সহযোগিতা করলে এ ভয়াবহ পরিস্থিতি হতো না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের প্রতিটি বিভাগ, ল্যাব, সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে ভাংচুর করে। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তামাশা দেখেছে।

তবে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ঘোষণার পর থেকেই পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।