সংস্কার কোটায় পাঁচ বিসিএসে ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে
সংস্কারকৃত নতুন কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে পাঁচটি বিসিএসে ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ক্যাডার পদে ১২ হাজার ৭১০ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ৫ হাজার ৪৩৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই নিয়োগে মেধা কোটায় ৯৩ শতাংশ এবং অন্যান্য কোটায় সাত শতাংশ নিয়োগ দেওয়া হবে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানান।
মোখলেস উর রহমান জানান, ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৬৪ জন, ৪৪তম বিসিএসে ১ হাজার ৭১০ জন, ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ জন, ৪৬তম বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০ জন এবং ৪৭তম বিসিএসে ৩ হাজার ৪৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া ৪৩তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার পদে ৬৪২ জন, ৪৪তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৯১ জন, ৪৫তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৫৭০ জন, ৪৬তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ১১১ জন এবং ৪৭তম বিসিএস থেকে ৩২৫ জন এবং ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার পদ। সচিব বলেন, ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৬৪ জনকে গেজেট করা হয়েছে এবং তাদের ১ জানুয়ারি যোগদানের কথা রয়েছে। এর আগে গেজেট প্রকাশের পর এই নিয়োগ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মাধ্যমে আরও যাচাই-বাছাই চলছে। একটি পরিষ্কার ইমেজ সঙ্গে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। লিখিত পরীক্ষায় ১১ হাজার ৭৩২ জন পাস করেছে। এর মধ্যে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ৩ হাজার ৯৩০ জন পরীক্ষার্থী।
৫ আগস্টের পরের পরিস্থিতিতে এই মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করে ২৫ আগস্ট। সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে এর আগে নেওয়া প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে এই বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১ হাজার ৭৩২ জন পরীক্ষার্থীর মৌখিক পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২ হাজার ৭৮৯ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে উল্লেখ করে মোখলেস উর রহমান বলেন, প্রথম পরীক্ষক লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার পর দ্বিতীয় পরীক্ষক তাদের মূল্যায়ন করেন। সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে এই লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, গত ৯ মে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়। এই ক্ষেত্রে, সম্ভাব্য বৈষম্য দূর করার জন্য, ইতিমধ্যে নির্বাচিতদের, অর্থাৎ 21,276 প্রার্থীদের সাথে একই সংখ্যক 10,638 প্রার্থী যোগ করার এবং তাদের লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে আবার ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩,৪৮৭টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে একটি অনুরোধ পাঠানো হয়েছে। পরে এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নতুন কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে অর্থাৎ মেধা কোটা হবে ৯৩ শতাংশ এবং বাকি ৭ শতাংশ হবে অন্যদের।
উল্লেখ, আদালতের সর্বশেষ নির্দেশনায় সব গ্রেডে ৯৩ শতাংশ চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। আর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।
পদোন্নতির দুটি স্তর থাকবে, গ্রেড-১: সরকার অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে কয়েক দিনের মধ্যে অবসরে যাওয়া বঞ্চিতদের গ্রেড-১ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ডিসি ফিটলিস্ট: এদিকে ডিসি পদে নতুন ফিটলিস্ট তৈরি করছে জনপ্রশাসন। সচিব বলেন, বিসিএসে নিয়োগের বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিব যোগ দিয়েছেন। SSB গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি শুরু হবে। যেহেতু অনেক পদে পদোন্নতি দেওয়া যায়নি। কিন্তু ব্যাচ ভিত্তিক পদোন্নতি অন্য বিষয়। যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন আরেকজন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অনেক বিতর্ক হয়েছে, নতুন ডিসি ফিটলিস্টের কাজ শুরু হবে। গতবারের মতো দিনরাত এ কাজ করতে হয়েছে। তবে মাঠ অনেক ভালো। এরপরও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন ডিসি দেওয়ার চেষ্টা করব। এসএসবির মাধ্যমে শিগগিরই এই কাজ শুরু হবে।
সিনিয়র সচিব বলেন, পদোন্নতি পাওয়া বঞ্চিত অতিরিক্ত সচিব; ১৩ দিনে তিনটি পদোন্নতি – তারা সারা বছর ধরে বঞ্চিত ছিল। বঞ্চিত এসব মানুষ অতিরিক্ত সচিব পদে চাকরির শেষ পর্যায়ে থাকায় তাদের গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনেকেরই এক মাস, ১৫ দিন, ২০ দিন। অনেকের পদোন্নতি হবে এবং তারা সামাজিক, পারিবারিক, আর্থিকভাবে লাভবান হবে।