ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করেননি, খালেদা জিয়া,খালাস চেয়ে লিভ টু আপিলের আদেশ আজ
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বরং টাকা ট্রাস্ট ফান্ডে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান। যদিও এই দুর্নীতির মামলায় তাকে জেল খাটতে হয়েছে। গতকাল আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে আপিলের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আগামী সোমবার আদেশের দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি, বরং তহবিল স্থানান্তর করে সুদসহ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। তিনি খালেদা জিয়ার অভিযোগের সাথে সম্পর্কহীন মামলার নথির উপাদান উপস্থাপন করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারিক আদালত একতরফা রায় দিয়েছে এবং হাইকোর্টের সাজা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে আইনি ত্রুটি রয়েছে।
কায়সার কামাল বলেন, ২০১৮ সাল রাজনৈতিক প্রতিশোধের জন্য খালেদা জিয়াকে প্রাথমিকভাবে ৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়। হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। এ সময় হাইকোর্টের রায়ের অংশবিশেষ উপস্থাপন করেন কায়সার কামাল। অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে অনুদান গ্রহণ বা বিতরণে খালেদা জিয়া জড়িত ছিলেন না।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওইদিন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়ার মওকুফের সিদ্ধান্ত ও পরের দিন গেজেট করা হয় এরপর ৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আবেদন করলে হাইকোর্ট তাদের আবেদন মঞ্জুর করে পেপার বুক তৈরির অনুমতি দেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেছেন, কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমাতে বিশ্বাস করেন না। তিনি দাবি করেন যে তিনি অপরাধ করেননি এবং ক্ষমা চাননি। আইনি পথে হেঁটে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান তিনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলার অপর তিন আসামি হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানও একই সাজা পেয়েছেন। ২০১০ সালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।