আজ মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসব
মণ্ডপের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও
প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের একাংশের মানুষ। ভয়-ভীতি, আতঙ্ক ও নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেও আনন্দের ধ্বনি বিরাজ করছে। চারিদিকে সাজ সাজ রব এবং প্রার্থনার প্রস্তুতি চলছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে শরতের ফুলের উঁকিঝুঁকি আর বাতাসে দোলনায় সৌন্দর্যের ডাক দিচ্ছে প্রকৃতি। এরই মধ্যে তরবারি-কৃপাণ, চক্র-গদা, তীর-ধনুক ও ত্রিশূল নিয়ে শক্তি রূপে দেবী দুর্গতিনাশিনী মণ্ডপে অধিষ্ঠান করবেন। শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষার পর আজ।
বুধবার মহাষষ্ঠীতে সনাতন ধর্ম ভক্তদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়, যা ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
এবারও উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখার প্রয়াসে পূজা মণ্ডপ ও এর আশপাশের এলাকাগুলো নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। কোনো ষড়যন্ত্র যাতে উৎসবের চেহারা নষ্ট করতে না পারে সেদিকেও নজর দেওয়া হবে। সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব ব্যাপকভাবে কাজ করছে। এছাড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও সারাদেশে পূজা মন্ডপে শৃঙ্খলা রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অবস্থান করছেন। এ জন্য প্রতিটি মন্ডপে দল গঠন করা হয়েছে।
লোকনাথ পঞ্জিকা অনুসারে, আজ বুধবার ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী, ১২ অক্টোবর মহানবমী এবং ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী অর্থাৎ প্রতিমা বিসর্জন। এ বছরেই ভাসতে বা পালকিতে আসবেন দেবী দুর্গা। সেই পালকি বা দোলায় দেবী এলে বা গেলে ফল হয় মড়ক। যেহেতু ২০২৪ সালে মর্ত্যে দেবী দুর্গার আগমন দোলনায়, ফলাফলটি হতে পারে মহামারী। যা ভালো লক্ষণ নয়। এ ছাড়া দেবী ঘোট বা ঘোড়ায় চড়ে স্বর্গ ভ্রমণ করবেন। শাস্ত্র মতে, দেবীর চলাচল বা আগমন মিস হলে ফল বিক্ষিপ্ত হয়। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে, ২০২৪ সালে দেবীর ট্রানজিট ঘোড়ায় থাকার কারণে ফলাফল বিক্ষিপ্ত হতে পারে। শাস্ত্র মতে এই ঘোটকে গামন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার ইঙ্গিত দেয়। এটি যুদ্ধ, অশান্তি, বিপ্লব নির্দেশ করে।
রামকৃষ্ণ মিশন নির্ঘণ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে দুর্গা দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। উৎসবের প্রথম দিন বিকেল ৫টার পর শুরু হবে ষষ্ঠী পূজা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর সাংবাদিকদের জানান, এ বছর সারাদেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। ঢাকা শহরে এ বছর ২৫২টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় এক হাজার মণ্ডপ কম।
পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার: শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সারাদেশের পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবারের দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এ উৎসব উপলক্ষে সারাদেশের উপাসনালয়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।