তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিচু এলাকা প্লাবিত
টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি সীমান্তের ওপর দিয়ে বইছে। রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিচু এলাকার অনেক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে যাওয়ায় সেসব এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যা ও ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।
শনিবার বেলা ১১টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ সীমানার ২.২ সেন্টিমিটার (৫২.১৫ সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, একই সময়ে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার। অন্য কথায়, এই সময়ে, পানি ১৬ সেন্টিমিটার অক্ষাংশের (২৯.৩১ সেন্টিমিটার অক্ষাংশ) নীচে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালীগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খাগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বৈশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার বন চর, ভাবনচুর, দৌয়াবাড়ি, ললঢাকা উপজেলার দৌলগ্রামের চর, গাঁজাখুরি, পাটগ্রামের চরাঞ্চল। খোদ হাতীবান্ধার, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়ন। সিঙ্গামারী ইউনিয়নের শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ধুবনী, সিন্দুরনা, পাটিকাপাড়া, দৌয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী, চর বৈরাটি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারির চর খুনিয়াগাছ ও গোয়ালা ইউনিয়নের রাজপুরে প্রবেশ করে। তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকা। এতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি চরের বাসিন্দারা। বোরো ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে।
এদিকে টানা বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের সব নদ-নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই সাথে ফসলি জমিতে পানি উঠে যাওয়ায় শীতকালীন সবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলির মতে, রংপুর বিভাগ এবং সংলগ্ন উচ্চভূমিতে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা (২.৮৯ মিমি/২৪ ঘন্টা) হ্রাস পেয়েছে। তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানির উচ্চতা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং আগামী দুই দিনে কমতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি বন্যা সীমা অতিক্রম করতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট চারণ এলাকা ও জেলার কয়েকটি নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। আগামী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি কমে সতর্কতা সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।