কর্মস্থল ত্যাগ করা আনসারদের চাকরি স্থগিত, অস্ত্র প্রত্যাহার,

0

বহিরাগতদের জন্য বাড়তি পোশাক নিয়ে আসে  আনসার সদস্যরা

সোশ্যাল মিডিয়ায় আনসার সদস্যদের বেশ কয়েকটি গ্রুপ ছিল। যেখানে প্রত্যেক আনসার সদস্যকে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় আসতে এবং অতিরিক্ত পোশাক নিয়ে আসতে বলা হয়। তাই স্পষ্ট, আনসারের পোশাকে আন্দোলনে বহিরাগতরা ছিল। দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও রহস্যজনক কারণে সচিবালয় ও ফোর্স হেডকোয়ার্টার্সের সামনে অবস্থান বাধার চেষ্টা করে আন্দোলনরত আনসার সদস্যরা। বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগ করায় আনসারদের চাকরি স্থগিত করা হয়েছে। আজ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বরখাস্ত হওয়া আনসারদের কাছ থেকে সব অস্ত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। কারণ, অবাধ্য ব্যক্তির কাছে অস্ত্র থাকলে তা দেশ ও জাতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা কাজে ফিরেনি তাদের পলাতক হিসেবে ধরা হয়। যারা সাধারণ আনসারদের ইন্ধন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক বলেছেন যে প্রতিটি আনসার সদস্য যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ থেকে আন্দোলন করছেন তাদের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে আসতে বলা হয়েছে এবং অতিরিক্ত পোশাক নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে আনসার পোশাকে আন্দোলনে বহিরাগতরা ছিল।

এই তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। এমনকি আমি নিজেও বিভিন্ন গ্রুপে এ ধরনের নির্দেশনা দেখেছি। আনসার সদস্যরা সচিবালয়ে অবস্থান নেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা আলোচনা করেন। এমনকি আন্দোলনরত আনসার সমন্বয়কারীরাও ওই আলোচনায় ছিলেন। আলোচনা শেষে আমরা তাদের দাবি মেনে নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। একটি কমিটিও গঠন করা হয়। তারা বেরিয়ে এসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। কিন্তু বাইরের লোক থাকায় তারা আন্দোলন থেকে সরে আসছিলেন না। এর মাধ্যমে বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু। এমনকি সমন্বয়কারীরাও স্বীকার করেছেন যে তাদের ঘোষণা মানা হচ্ছে না। এমনকি এসব আন্দোলনে অপকর্মের কারণে চাকরি হারানো আনসার সদস্যরাও সেখানে ছিলেন না। আন্দোলন শুরুতে আনসারদের সঙ্গে থাকলেও পরে তা চলে যায় অন্যদের হাতে।

আনসারদের দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক বলেন, আমরা তাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটিও গঠন করেছি। কিন্তু সব কিছুর বাইরে গিয়ে তারা একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিল। এ ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। অনেককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা ত্যাগকারী আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, আনসার সদস্যরা দেশের বিমানবন্দরসহ কেপিআই স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। তবে সেসব স্থাপনা অরক্ষিত অবস্থায় রেখে তারা আন্দোলনে নেমেছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগের সুযোগ নেই। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে তারা যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আনসার বাহিনীর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ জেলায় ২৯ হাজার আনসার সদস্য নিয়োগের তথ্য সঠিক নয়। প্রতিটি জেলাকে আলাদা নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাই খুব বেশি নিয়োগের সুযোগ নেই। তাই প্রচারিত তথ্য সঠিক নয়। গোপালগঞ্জ জেলা থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত আনসারের সংখ্যা ১৩০০।

প্রসঙ্গত, সচিবালয় ঘেরাও ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ, পল্টন ও রমনা থানায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ৩৭৫ আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *