শিক্ষার্থীদের  ছেড়ে দিতে নাগরিক সমাজের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

0

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিনা কারণে আটক শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের মুক্তি দিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মিন্টো রোডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ের গেটে এ মানববন্ধন শুরু হয়।

মানববন্ধনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অনারারি ফেলো অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিনা বিচারে আটক ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ এবং আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এটাই আমাদের প্রধান দাবি।

তিনি বলেন, আমরা শুনেছি কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সদস্যকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা খুশি কিন্তু সন্তুষ্ট নই। কারণ ঢাকাসহ সারাদেশে এখনো ছাত্র-শিক্ষক আটক, সাধারণ মানুষকে বিনা বিচারে আটক করা হয়।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, আমরা কি জরুরি অবস্থায় আছি? না হলে সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে। সমাবেশের অধিকার, বাক-স্বাধীনতার অধিকার- এগুলো কেন নিশ্চিত করা হচ্ছে না এবং কেন রাস্তায় সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে? যেটা হয়েছে বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা বিরাজ করছে। এ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে সরকারকে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে আটকের সমালোচনা করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আপনাকে কে বলেছে যে তারা আপনার সাথে নিরাপদ বোধ করবে? নিরাপত্তার সংজ্ঞা দাও, দেখব সংবিধানে হেফাজতের আইনে কী আছে।

তিনি বলেন, আমরা আসার আগেই তাদের (সমন্বয়ক) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তারা তাদের পরিবারের কাছে গেছে কি না তা এখনো জানি না। ছেড়ে দেওয়া মানে শুধু পরিবারের সাথে আবদ্ধ হওয়া নয়। তারা যা করেছে তাতে কোনো অন্যায় নেই। আমরা এই নিশ্চয়তা চাই যে তারা তাদের কাজ স্বাধীনভাবে করতে পারবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানই মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে, প্রতিটি পর্যায়ে, মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে, অথচ তারা নিজেরাই যে মূর্খতা প্রদর্শন করছে তা ভুলে গেছে। এই মিথ্যা, অন্ধত্ব ও প্রতারণার মাধ্যমে তারা যে কাজ করেছে, তা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, আইন লঙ্ঘন করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, সরকার মিথ্যা ও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে টিকে আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আটককৃত ছাত্রদের মুক্তি না দেওয়া হয়, যদি খুনের বিচার না হয়, অবিলম্বে স্কুলগুলি চালু না করা হয়, তাহলে আমরা সুশীল সমাজের বৃহত্তর কর্মসূচি পালন করব।”

এ সময় শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশে সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *